তাপসের গানবাংলা বন্ধ দেড় কোটি টাকা বিল বকেয়া
বিশেষ প্রতিনিধি : অবশেষে গানবাংলা টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে দেড় কোটি টাকা স্যাটেলাইট বিল বাকী থাকায় চ্যানেল সম্প্রচার অব্যাহত রাখতে পারছে না বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্যাটেলাইট ফি বকেয়া থাকার কারণে সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড। আজ বুধবার ১১ ডিসেম্বর দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে খবরটি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাহ আহমেদুল কবির।
আহমেদুল কবির বলেন, ‘আমরা চ্যানেলটির কাছে অনেক টাকা পাই। চুক্তি অনুযায়ী আমাদের কাছ থেকে যে সময়টা পর্যন্ত সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল, তা বারবার অতিক্রম করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আমরা গানবাংলা কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। চিঠি দিয়েছি। দেখা যাচ্ছে, হঠাৎ হঠাৎ অল্প কিছু পরিশোধ করে। এভাবে তো আর হয় না। তাই আমরা আপাতত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি। তারা যদি বকেয়া পরিশোধ করে তাহলে আমরা পুনরায় সংযোগ চালু করে দেব। আহমেদুল কবির জানান, আজ বুধবার দুপুর ১২টার পর থেকে গানবাংলা চ্যানেলের সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ আছে।
তিনি বলেন, ‘কৌশিক হোসেন তাপস সাহেব এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তাঁর স্ত্রী ফারজানা মুন্নী চেয়ারম্যান—তাঁদের দুজনের সঙ্গে কোনো দিন আমাদের দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। তাঁরা রিচেবলও না। তাপস সাহেবের বাবা দেলোয়ার হোসেন রাজা সাহেব যোগাযোগ রাখেন। তাঁর সঙ্গে গতকালও আমাদের কথা হয়েছে। তাঁকে আমরা বলেছি, এত টাকা বকেয়া, আমরা তো এভাবে আর সংযোগ চালু রাখতে পারছি না।’
কত টাকা বকেয়া আছে এমন প্রশ্নে আহমেদুল কবির জানালেন, গানবাংলা চ্যানেলের কাছে স্যাটেলাইট ফি বাবদ ১ কোটি ৬০ লাখ ৩২ হাজার টাকা বকেয়া আছে।
এদিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও যথাসময়ে বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ‘বার্ডস আই মাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন লিমিটেড (গানবাংলা টেলিভিশন)’–এর সম্প্রচার আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বকেয়া পরিশোধ সাপেক্ষে পুনরায় সম্প্রচার চালু করা হবে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এর আগে ৪ নভেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করা হয় গায়ক ও গানবাংলা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপসকে। ঢাকার ভাটারা থানাধীন গানবাংলা টেলিভিশন কার্যালয়ের সামনে থেকে ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের করা মামলা নম্বর ৯। তাপসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। এ ঘটনায় ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন ১ নম্বর আসামি এবং এরপর যথাক্রমে সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলাম, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। তাপস এই মামলার ৯ নম্বর আসামি।