অপরাধ

ফেসিস্ট নাঈমের পেটে ৩৮৬ কোটি

হাসিনার প্রেস সচিব সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।ধুরন্ধর নাঈম ইতিমধ্যে সরকার পতনের আগেই ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা তারা উত্তোলন করে পালিয়েছেন। বর্তমানে হিসাবগুলোতে ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে।

 

শফিক রহমান : ফেসিস্ট নাঈম গিলেছে ৩৮৬ কোটি। আর্থিক গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে নাঈমের এই লুটপাটের চিত্র মিলেছে প্রাথমিক তদন্তে! আরও কত কোটি বের হবে তা নিয়েও চলছে আলোচনা। গোয়েন্দারা দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

ধুরন্ধর নাঈম ইতিমধ্যে সরকার পতনের আগেই ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা তারা উত্তোলন করে পালিয়েছেন। বর্তমানে হিসাবগুলোতে ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ৯১টি। এসব হিসাবে ২৪৯ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন।

বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি ১৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন।এসব হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে তিনি ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।

তার তিন মেয়ের ব্যাংক হিসেবেও মোটা অঙ্কের অর্থ জমা হওয়ার তথ্য মিলেছে।আদিবা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাইম খানের অ্যাকাউন্টে ৬১ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব অর্থের সিংহভাগই তারা উত্তোলন করে নিয়েছেন। এছাড়া নাইমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি হিসাবে জমা হয়েছে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর প্রায় পুরো টাকাই তিনি উত্তোলন করে ফেলেছেন। মাত্র ২১ লাখ টাকা জমা আছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাইমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী সন্তানরা মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এসব কার্ডের সর্বমোট সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। কার্ডগুলোতে বর্তমানে বকেয়া পড়েছে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা। এর মধ্যে নাঈমুল ইসলাম খান একাই ব্যবহার করেন ছয়টি ক্রেডিট কার্ড। এসব কার্ডের সীমা ১৫ লাখ টাকার বেশি। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির আছে ৪টি ক্রেডিট কার্ড। এসব কার্ডের সীমা চার লাখ হাজার ১৯ হাজার টাকা। এছাড়া তার দুজন কন্যা সারে ৪ লাখ টাকা সীমার দুটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন।

হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২৫ আগস্ট নাইমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) । যদিও এর আগেই তারা প্রায় সব টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদি শাসনের অবসান হলে আত্মগোপনে চলে যান প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান। এরপর তিনি তার পরিচালিত পত্রিকাগুলো বন্ধ ঘোষণা করেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button