রাজনীতি

‘দুর্নীতি সব শেষ করে দিচ্ছে’

দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমরা একটা চেষ্টা করছি। দুর্নীতি থেকে বের করার ক্ষেত্রে অনলাইন কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে জায়গাগুলোতে অনলাইন ব্যবস্থা আছে সেগুলো পুরোপুরি কার্যকর করার নির্দেশনা দেন। আন্তর্জাতিক সহায়তার কারণে এগুলো তৈরি হয়েছে কাজে লাগানো হয়নি।

বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ দুর্নীতির অনেক গভীরে ঢুকে গেছে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দুর্নীতি সব শেষ করে দিচ্ছে, এটা থেকে বের হতে না পারলে বাংলাদেশের কোনো গতি নাই। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সামনে বিশাল জগৎ, শুধু আমাদের সিদ্ধান্ত এবং কর্মসূচিগুলো ঠিক করার অপেক্ষায়। এই যে এত বড় সুযোগ আমাদের আছে এবং এগুলো বাস্তবায়ন হবে সেগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা নাই। আমাদের আছে তারুণ্য, আছে প্রাকৃতিক সুযোগ। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি, এটাই সব শেষ করে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটা কথা শুধু বললাম। একটা উদাহরণ, এই উদাহরণ সর্বত্র।

তিনি বলেন, যেকোনো পরীক্ষায় আপনারা দেখবেন বাংলাদেশ দুর্নীতির তালিকায় সর্বনিম্নে। সততা, শৃঙ্খলা বলে আমাদের আর কোনো জিনিস নাই। কাজেই এ দুর্নীতি থেকে বের না হলে কোনোটাই হবে না।অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা আজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সম্মেলনে এসেছি। কাজেই দুর্নীতি কোথায় আছে, কীভাবে আছে তাদের কাছে এটা অজানা নয়। এটা থেকে বের হতেই হবে আমাদের।

তিনি বলেন, এটা (দুর্নীতি) থেকে আমরা কেউ মুক্ত হতে পারছি না, অনেক গভীরে ঢুকে গেছি আমরা। যত বক্তৃতাই করি সবই অসার, যদি না আমরা ওই স্কেলে একটা সৎ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে না পারি।

দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমরা অল্প সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে আছি, কতটুকু সমাধান দিতে পারবো জানি না। তবে আশা থেকে আমরা একটা চেষ্টা করছি। অতীতেও চেষ্টা হয়েছে কিন্তু সেটা কাগজ পত্রে চেষ্টার মধ্যে রয়ে গেছে, কাজে লাগে নাই।

দুর্নীতি থেকে বের করার ক্ষেত্রে অনলাইন কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে জায়গাগুলোতে অনলাইন ব্যবস্থা আছে সেগুলো পুরোপুরি কার্যকর করার নির্দেশনা দেন। আন্তর্জাতিক সহায়তার কারণে এগুলো তৈরি হয়েছে কাজে লাগানো হয়নি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও চায় আমরা দুর্নীতি মুক্ত হই। কারণ দুর্নীতি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুই চলছে না। তারাও চায় আমাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য হোক, এটা তাদের গবেষণা। আমরা তাদের সুযোগ দিতে চাই না। আমরা ব্যক্তিগত সুযোগ নিয়ে ব্যস্ত আছি। জাতীয় সুযোগের জন্য আমরা মোটেও চিন্তিত নই। আমাদের সেই চিন্তা পাল্টাতে হবে।

অনুরোধ জানাই আজ যারা সরকারি কার্যক্রমে আছেন। সরকার তো হলো গোড়া, দুর্নীতির গোড়ায় হলো সরকার। সেখান থেকে সরকারকে বের হতে হবে। সরকার যদি দেশের উপকারে আসতে চায়। তাহলে এটা থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। এই আবেদন করবো, আমরা থাকা অবস্থায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অনলাইন সার্ভিস, যেগুলো তৈরি আছে, ভবিষ্যতে যেগুলো তৈরি হবে সেগুলোর কথা বলছি না, যেগুলো তৈরি আছে সেটা শতভাগ যেন আমরা বাস্তবায়ন করে যেতে পারি।

সিঙ্গাপুরের মতো দেশ যদি দুর্নীতি মুক্ত হতে পারে। আমরা পারবো যদি সবাই মিলে চেষ্টা করি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতি থেকে বিভিন্ন দেশ বের হয়ে আসছে, এটা সম্ভব, অসম্ভব কিছু না। শুধু চেষ্টার দরকার। শুধু আমাদের প্রতিজ্ঞার দরকার, এটা আমরা করবো।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button