
পদ বাণিজ্যে হাসনাতে বিক্ষুদ্ধ চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধীরা।প্রকৃত আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত, কিশোর গ্যাং সদস্য ও ব্যবসায়ীদের কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : পদ বাণিজ্যে হাসনাতে বিক্ষুদ্ধ চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামের সমন্বয়করা কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ। তাদের অভিযোগ, প্রকৃত আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত, কিশোর গ্যাং সদস্য ও ব্যবসায়ীদের কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ‘এই কমিটি বাতিল করতে হবে। যদি বাতিল না হয়, তাহলে হাসনাত আব্দুল্লাহ চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত হবেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের একাংশের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী সিয়াম ইলাহি, জুবাইর মানিক ও আব্দুল বাছির নাঈম। তারা বলেন, ‘যারা আন্দোলনে মাঠে ছিল, তাদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের নেতৃত্বে বসানো হয়েছে। আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। আমরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি এবং পদত্যাগ করছি।’সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়করা অভিযোগ করেন, ‘নারী হেনস্তায় অভিযুক্ত ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। অথচ আমরা কেন্দ্রের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। তদন্তের আশ্বাস দিলেও এখনো তা করা হয়নি। উল্টো তাদেরই নেতৃত্বে বসানো হয়েছে।’
সিয়াম ইলাহি বলেন, ‘এই কমিটির মাধ্যমে আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে। যারা রক্ত দিয়েছে, যারা আহত হয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে উড়ে এসে জুড়ে বসাদের কমিটিতে বসানো হয়েছে।’জুবাইর মানিক বলেন, ‘আন্দোলনের সময় যারা পাশে ছিল না, তারাই এখন নেতা সেজেছে। অথচ আহতদের পাশে যারা ছিল, তারা মূল্যায়নই পায়নি। এটা শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’
আব্দুল বাছির নাঈম বলেন, ‘বিচার ও আহতদের পাশে থাকা কর্মীদের মূল্যায়ন না করে যারা চাঁদাবাজি করেছে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে, তাদেরই কমিটিতে বসানো হয়েছে। এটি চট্টগ্রামের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।’তিন দফা দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘যদি দাবি না মানা হয়, তাহলে চট্টগ্রামে কঠোর আন্দোলন হবে। এর দায়ভার হাসনাত আব্দুল্লাহকেই নিতে হবে।’
তাদের দাবিগুলো হলো— বিকেল ৩টার মধ্যে নতুন কমিটি বাতিল করে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করতে হবে। তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। কমিটি গঠনের সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়করা আরও বলেন, ‘বীর চট্টলায় অন্যায় কমিটি টিকবে না। আন্দোলনকারীদের বঞ্চিত করলে আমরা রাজপথে নামবো।’
এর আগে, সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় কমিটি আগামী ছয় মাসের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর ৩১৫, জেলা উত্তরে ১১২, জেলা দক্ষিণে ৩২৭ সহ মোট ৭৫৪ সদস্যবিশিষ্ট তিনটি কমিটির অনুমোদন দেয়। এরপর থেকেই নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।