এলজিইডি গাইবান্ধা এক্সেনের ৩৭ লাখ তেলেসমাতি

এক্সেন বলেছেন, গাড়িতে ৩০ লাখ টাকা আছে। কিন্তু টাকাগুলো গুনে দেখা যায়, গাড়িতে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা রয়েছে। ঘুষের টাকা না হলে টাকা গুনতে গিয়ে তা বেশী হওয়াকে সন্দেহ করছেন ইউএনও ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
গাইবন্ধা প্রতিনিধি : এলজিইডির গাইবান্ধা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী (এক্সেন) ছাবিউল ইসলামের গাড়িতে উদ্ধারকৃত টাকার পরিমান নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। এক্সেন বলেছেন, গাড়িতে ৩০ লাখ টাকা আছে। কিন্তু টাকাগুলো গুনে দেখা যায়, গাড়িতে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা রয়েছে। ঘুষের টাকা না হলে টাকা গুনতে গিয়ে তা বেশী হওয়াকে সন্দেহ করছেন ইউএনও ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রশ্ন উঠেছে জমি বিক্রির টাকা হলে সেটা রাজশাহীতে হতে পারত। কিন্তু সেটা তার কর্মস্থল এ আসল কি করে? তাছাড়া জমি বিক্রির এত টাকা তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে না পাঠিয়ে গাড়িতে কেন নিচ্ছিলেন?
সরেজমিনে জানা গেছে, ইউএনও ও সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে পুলিশ টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাবিউল ইসলাম জানান, গাড়িতে ৩০ লাখ টাকা আছে। এসব টাকা তাঁর জমি বিক্রির টাকা। তবে টাকাগুলো গুনে দেখা যায়, গাড়িতে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা রয়েছে। এত টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে না পাঠিয়ে রাতের আঁধারে গাড়িতে করে কেন নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। পরে জব্দ তালিকা মূলে টাকা ও গাড়ি থানা হেফাজতে রাখা হয়। এ সময় আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাবিউল ইসলাম ও তাঁর চালককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, নাটোরের সিংড়ায় গাড়ি তল্লাশির সময় গাইবান্ধার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের গাড়ি থেকে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সদরের চলনবিল গেট এলাকায় এ ঘটনা দৃশ্যমান হয়।
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) এক প্রকৌশলী কাছ থেকে ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সদরের চলনবিল গেট এলাকায় তল্লাশির সময় একটি প্রাইভেট কার থেকে এসব টাকা জব্দ করা হয়।ওই প্রকৌশলীর নাম ছাবিউল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ জানায়, থানা-পুলিশ ও সেনাসদস্যরা যৌথভাবে গতকাল রাতে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের যানবাহন তল্লাশি করছিলেন। রাত ২টার দিকে বগুড়া থেকে নাটোর অভিমুখে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির সময় গাড়ির পেছনের ডালায় বিপুল পরিমাণ টাকা দেখতে পান। এ সময় গাড়িতে থাকা আরোহী ছাবিউল ইসলাম নিজেকে গাইবান্ধা জেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচয় দেন। তখন ওই ব্যক্তিকে ও তাঁর গাড়ির চালকসহ সিংড়া থানায় নিয়ে যান। এর আগে ঘটনাটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়।
ছাবিউল পুলিশকে জানিয়েছেন, জব্দ করা এসব অর্থ তাঁর জমি বিক্রি করা টাকা। তিনি টাকাগুলো গাইবান্ধা থেকে নিয়ে সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে রাজশাহীতে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, জব্দ করা অর্থের উৎস ও ওই প্রকৌশলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য টাকা, প্রাইভেট কার ও এর বাহককে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। পরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।