
গ্রেফতার না করে ইসলামী ব্যাংকের খলনায়ক এমডিকে ফোর্স-লিভ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এমডি যাতে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারেন সে লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এমডি মনিরুল মওলা যে কোনো সময় দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারেন।অতিরিক্ত এমডি ওমর ফারুক খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
লাবণ্য চৌধুরী : গ্রেফতার না করে ইসলামী ব্যাংকের খলনায়ক এমডিকে ফোর্স-লিভ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এমডি যাতে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারেন সে লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এমডি মনিরুল মওলা যে কোনো সময় দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারেন।রবিবার বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের এস-আলমের ব্যাংক লুটের খলনায়ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওদিকে- ব্যাংকের পর্ষদ সভায় অতিরিক্ত এমডি ওমর ফারুক খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, আগামী তিন মাস তিনি ছুটিতে থাকবেন। সোমবার থেকে তার ছুটি কার্যকর হবে।চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপ, নাবিল গ্রুপকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সুবিধা দেওয়া ও বিভিন্ন ঋণসংক্রান্ত অনিয়মে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।রোববার ব্যাংকের ৩৫৯তম পর্ষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে সভায় ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি ওমর ফারুক খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক ব্যাংকার ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে চেয়ারম্যান করে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সাল থেকে ব্যাংকটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এস আলমের মালিকানাধীন গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। নতুন পর্ষদ গঠনের পর অনিয়ম খুঁজতে চারটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়।
ব্যাংকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এসব নিরীক্ষায় এস আলম সংশ্লিষ্ট প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ঋণে অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। এতে এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এমডিকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬- ধারা অনুযায়ী তাকে যেন অপসারণ করে, এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে তার অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে চিঠি দেবে ইসলামী ব্যাংক।
ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন সময় এমডি হিসেবে নিয়োগ পান মনিরুল মওলা। তার সময় এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে ব্যাংকটি দুর্বল করে ফেলেছে। অভিযোগ রয়েছে, এস আলমকে এসব অনৈতিকভাবে ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন মনিরুল মাওলা।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও এমডি মনিরুল মওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংক থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ আছে।