জাতীয়

দানবীয় শাসনের ঝুঁকি আছে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে : বদিউল আলম মজুমদার

”ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন আবু সাঈদসহ ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছিল দেশের মৌলিক সংস্কারের জন্য। আমরা আশা করছি, শহীদ দিবসে সংবিধান সংস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটি জাতীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।”

 

রংপুর প্রতিনিধি : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, “সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেও শাসক দানবে পরিণত হতে পারে। ফলে মৌলিক সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রংপুরের আরডিআরএস হল রুমে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

আবু সাঈদের শহীদ দিবস উপলক্ষে ড. বদিউল বলেন, “আবু সাঈদসহ ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছিল দেশের মৌলিক সংস্কারের জন্য। আমরা আশা করছি, শহীদ দিবসে সংবিধান সংস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটি জাতীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।”তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার অধ্যাদেশ জারি করে কিছু সংস্কার শুরু করতে পারে, তবে কিছু বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।” এজন্য জাতীয় সনদের বিষয়গুলো নিয়ে সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “ছাত্ররা রাজনীতি করবে, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবে, কিন্তু তারা যেন লাঠিয়াল বাহিনী না হয়। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়, বরং লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।” তিনি মন্তব্য করেন, “হাসিনার পতন শুরু হয়েছিল যেদিন ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল।”
সংসদীয় সংস্কার প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, “আমাদের দেশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রয়োজন। উচ্চকক্ষ হবে অর্ধেক দলীয় ও অর্ধেক নির্দলীয় প্রতিনিধি নিয়ে এবং সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে। নিম্নকক্ষে জনস্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নিলে, উচ্চকক্ষ তা পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থী মনোনয়নের জন্য আগেভাগে যাচাই-বাছাই করতে হবে। প্রার্থীদের হলফনামার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা যেতে পারে।” পাশাপাশি দলগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু। সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলিপ সরকার, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজেশ দে রাজু, অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মাহে আলম, সমাজকর্মী মঞ্জুশ্রী সাহা প্রমুখ।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা আগামীর বাংলাদেশ গঠনে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, রাজনৈতিক দলের ভেতরে গণতন্ত্রের চর্চা এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্যখাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button