এনবিআরে ‘টিট ফর ট্যাট’ ৮ কর কর্মকর্তা সাইজ

বদলি অর্ডার ছিঁড়ে ফেলা এবং তা দেখে ফেলা জনিত ঘটনায় ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে এনবিআর। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এনবিআরে চলছে ‘টিট ফর ট্যাট’ অবস্থা। গত মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবার শায়েস্তা করা হচ্ছে।
বিশেষ প্রতিনিধি : বদলি অর্ডার ছিঁড়ে ফেলা এবং তা দেখে ফেলা জনিত ঘটনায় ৮ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে এনবিআর। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এনবিআরে চলছে ‘টিট ফর ট্যাট’ অবস্থা। গত মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবার শায়েস্তা করা হচ্ছে।
গত ২৮ ও ২৯ জুন সারা দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও ক্ষোভ প্রত্যাহার হয়নি কোনো পক্ষে’ই। মাঝখানে কিছু ‘মিরজাফর’ উভয় পক্ষে সুবিধা নিয়ে লাভবান হয়েছে। আর উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে পড়েছে-এমন অবস্থা এখন এনবিআরে।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে এবার আরও আট কর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে সরকার। বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আজ মঙ্গলবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ–সংক্রান্ত পৃথক পৃথক আদেশ জারি করেছে।
যাঁরা বরখাস্ত হলেন ঢাকা কর অঞ্চল-২–এর যুগ্ম কর কমিশনার মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫–এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের মোরশেদ উদ্দীন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার আশরাফুল আলম প্রধান, খুলনা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার নুশরাত জাহান ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে এনবিআরে যে আন্দোলন হয়েছে, তাঁরা সবাই ওই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। কেউ কেউ নেতৃত্বও দিয়েছেন।
আদেশ অনুসারে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালে তাঁরা বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান আদেশে সই করেন।গত মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ২৮ ও ২৯ জুন সারা দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
এরপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারের পরের এই পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কাজ বন্ধ রাখার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া এনবিআরের দুজন সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তাঁদের অধিকাংশই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।