জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে সারাদেশে শহীদদের স্মরণ

ন্যাশনাল ডেস্ক : স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের বর্ষপূর্তি ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে সারাদেশে শহীদদের স্মরণসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে।মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদসহ জুলাইযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অংশ নিয়েছে আলোচনা, র্যালি ও দোয়া মাহফিলে।গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যয় সবার।
দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
ঢাকা: রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ যেন আজ এক বিশাল মিলনমেলা। ‘ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’র এক বছরপূর্তি উপলক্ষে সকাল থেকেই এখানে মানুষের ঢল নেমেছে।অ্যাভিনিউজুড়ে চলছে গান, স্মৃতি, হাসি আর প্রতিবাদের সম্মিলিত উচ্ছ্বাস— যেন স্বাধীনতার আরেকবার স্বাদ নেওয়া। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এর আগে থেকেই বিভিন্ন বয়স, শ্রেণিপেশার মানুষ আসতে শুরু করেন প্রিয় পতাকা হাতে, কেউবা শিল্পীদের গান শোনার আশায়। সবার চোখেমুখে বিজয়ের উজ্জ্বল স্মৃতি আর আগামীর স্বপ্ন।মূল মঞ্চ ছাড়াও অ্যাভিনিউজুড়ে বসানো হয়েছে চারটি জায়ান্ট স্ক্রিন। সংসদ ভবনের মূল গেটে চলছে লাইভ স্ক্রিন শো এবং গেম শো। সবচেয়ে বেশি ভিড় ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দৌড়ানি’ প্রতীকী খেলায়।
ঝালকাঠিতে নয় শহীদের কবরে জেলা প্রশাসন-
ও এলজিইডি’র পক্ষে পুস্পস্তবক অর্পণ
ঝালকাঠি : জেলা সদর উপজেলার আগড়বাড়ি এলাকায় সকাল ৯টায় শহীদ মো. কামাল হোসেন সবুজের কবরের সামনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুর রহমান, ঝালকাঠি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ শহীদুল ইসলাম সরকার, জেলা পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন, ঝালকাঠি জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, এনসিপি ঝালকাঠি জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক মাইনুল ইসলাম মান্না এবং শহীদ কামালের স্ত্রী সাদিয়া বেগমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
একই সময় ঝালকাঠির বিভিন্ন কবরস্থানে দাফনকৃত আরও নয় শহীদের কবরেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন অন্যান্য কর্মকর্তারা। পরে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় মিলাদ, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করেছে।
বরগুনা: ‘৩৬ জুলাই’ -এ স্লোগানকে সামনে রেখে বরগুনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫ । দিবসটি উপলক্ষে সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সম্মিলন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বরগুনা ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান এ দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। শহীদদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।বিশেষ অতিথি ছিলেন বরগুনা এসপি মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল। তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্মরণ করা এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. আবুল ফাওাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অনিমেষ বিশ্বাস,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) স্বজল চন্দ্র শীল, জেলা সদর ইউএনও মো. আরাফাত রানা, পাথরঘাটা ইউএনও মো. মিজানুর রহমান।সম্মিলনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবার ছাড়াও জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।
গাজীপুর: নানান আয়োজনে গাজীপুরে উদযাপন করা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫। দিনব্যাপী গাজীপুর জেলা প্রশাসন, গাজীপুর মহানগর, জেলা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দিবসটি উদযাপনের আয়োজন করা হয়। ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে বিভিন্ন এলাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকায় শহীদ ইলিম হোসেন ও শহীদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন গাজীপুর ডিসি নাফিসা আরেফিন ও এসপি ড. চৌধুরী এম যাবের সাদেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন ও কালিয়াকৈর ইউএনও কাউসার আহমেদ, শহীদ পরিবারের সদস্যসহ অন্যরা। পরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে গাজীপুর মহানগরের এরশাদ নগর এলাকায় শহীদ সানজিদ হোসেন মৃধা ও নাফিসা হোসেন মারওয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন. গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, গাজীপুর সদর ইউএনও শেখ মামুনুর রশিদ, টঙ্গী রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুজ্জামান হিমু প্রমুখ।
এছাড়া মহানগর ও জেলায় অন্যান্য উপজেলায় শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কর্মসূচি পালন করা হয়।
অপরদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে (ব্রি) বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। বি আর আর আই উচ্চ বিদ্যালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. রফিকুল ইসলাম, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মুন্নুজান খানম।
এছাড়াও গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) জুলাই’২৪ গণঅভ্যুত্থান স্মরণে দোয়া, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে ধারণ করে রাখার জন্য গাকৃবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখ চত্বরকে জুলাই ৩৬ চত্বর ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। জুলাই শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে রক্তদান ও রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
অপরদিকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) গাজীপুরস্থ মূল ক্যাম্পাসে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ এ আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে নবনির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘জুলাই জাগরণী’- শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন।এদিকে গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে গাজীপুর মহানগরের শিববাড়ি মোড়ে বর্ণাঢ্য গণমিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক মুহা. জামাল উদ্দিন।
অন্যদিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে জুলাই শহীদ মুগ্ধের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ‘মুগ্ধ সুপেয় পানির কর্নার’। সকালে গাজীপুর ডিসি নাফিসা আরেফীন সাধারণ যাত্রীদের জন্য কর্নারটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদুল হাসান, এসপি ড. যাবের সাদেকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে গাজীপুর জেলা পরিষদ ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় এটি নির্মাণ করেছে।গাজীপুর ডিসি নাফিসা আরেফীন বলেন, মুগ্ধ কর্নারটি গাজীপুরের শ্রমজীবী মানুষের সুবিধার জন্য নির্মিত হয়েছে। এর মাধ্যমে মুগ্ধের স্মৃতি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এর আগে জেলার বিভিন্ন স্থানে জুলাই শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ডিসিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বরিশাল: জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত,দোয়া মোনাজাত ও স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে বরিশালে জুলাই শহীদ দিবস উদযাপন হয়েছে।জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বেলা ১২টায় ব্রজমোহন কলেজে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। এতে কলেজ অধ্যক্ষ ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।এখানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বিভীষিকাময় সেই দিনগুলোর কথা তুলে ধরেন।তারা বলেন,১৬ জুলাই বরিশাল বিএম কলেজ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয় । কিন্তু এমনটা করতে গিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনে অনেক বার মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে পড়েছি। ছাত্রলীগ ও পুলিশের পিটুনি এড়াতে মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে। আমরা চাই না সেই বিভীষিকার দিনগুলো আর ফিরে না আসুক কখনও।
শাবিপ্রবি (সিলেট): বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন-১ এর সামনে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন যথাক্রমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম।এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এছাক মিয়া, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটগুলোর পরিচালক, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা, বিভাগীয় প্রধানগণ, হল প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টরা, দপ্তর প্রধানরা, ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সংগঠনের ছাত্র প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। র্যালি শেষে দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকবালের সভাপতিত্বে ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কালাম আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি নিখোঁজদের দ্রুত ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা করেন উপাচার্য।
নেত্রকোনা: জেলা সদর উপজেলার নন্দীপুর চরপাড়া গ্রামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রমজান আলীর কবরে সকাল ৯টায় পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) বনানী বিশ্বাস। পরে পুলিশ সুপার (এসপি) মির্জা সায়েম মাহমুদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা বিনতে রফিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জেলা শহরে বিজয় মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়।পরিবারের অভাব ঘোচাতে মাত্র পাঁচ বছর আগে ঢাকায় পাড়ি দেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার চরপাড়া নন্দীপুর গ্রামের রমজান মিয়া। সেখানে তিনি আকিজ গ্রুপে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই—ঢাকা রামপুরায় ‘জুলাই বিপ্লব’ কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতার মিছিলে রমজানের গলায় ও বুকে পুলিশের ছোড়া গুলি বিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠিতে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়েছে শহীদদের। সকাল ৯টায় আগড়বাড়ি কবরস্থানে শহীদ মো. কামাল হোসেন সবুজের কবরসহ নয় শহীদের কবরস্থানে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত।
নওগাঁ: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে নওগাঁয় গণমিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। সকাল ১১টায় জেলা শহরের মুক্তির মোড় থেকে একটি গণমিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।এর আগে জামায়াতে ইসলামী নওগাঁ পৌরসভা ও নওগাঁ সদর উপজেলা শাখার আয়োজনে মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে দলটি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নওগাঁ জেলা জামায়াতের আমির খ.ম আব্দুর রাকিব।
সমাবেশে নওগাঁ সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মহিউদ্দিন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আ স ম সায়েম, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মোনায়েম হোসাইন, নওগাঁ পৌরসভা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ওবায়দুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাকিব।
বান্দরবান: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বান্দরবানে উদযাপিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ৫ আগস্ট সকালে আয়োজন করা হয় এক আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান ডিসি শামীম আরা রিনি।সভা শেষে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া গণঅভ্যুত্থানে আহত দুজন ছাত্রকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়।
এ সময় বান্দরবান এসপি মো. শহীদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম মনজরুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মমতা আফরিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এস এম হাসান, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ রায়হান, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জয়া দত্ত, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এম এম শাহ নেয়াজ, সমাজ সেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মিলটন মুহুরী, জামায়েত ইসলামী বান্দরবান জেলার আমির এস এম আবদুচ ছালাম আযাদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আসিফ ইকবালসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদপুর: জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই ৩১ শহীদ পরিবার ও ২৯৩ আহত জুলাই যোদ্ধাদের সমিল্লন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন ডিসি মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। সভাপতির বক্তব্যের পূর্বে শহীদ পরিবার ও আহতদেরকে উত্তরিয় ও জাতীয় পতাকা জরিয়ে দেন ডিসি। এছাড়াও জুলাইয়ে শহীদদের নামের খচিত একটি সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।
সদর ইউএনও সাখাওয়াত জামিল সৈকতের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা এসপি মুহম্মদ আব্দুর রকিব, জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, জামাতে ইসলামী চাঁদপুর জেলা শাখার আমীর মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, এনসিপির সমন্বয়ক সাইফুর রহমান গাজী, গণপরিষদের আহবায়ক কাজী রাসেল, শহীদ সাজ্জাদ হোসাইন সাব্বিরের বাবা মো. জসিম রাজা এবং আহতদের পক্ষে বক্তব্য দেন মো. নাদিম হোসেন।পরে আলোচনা সভা শেষে জেলা শিল্পকলার আয়োজনে মনোমুগ্ধকর ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হয়। যেখানে বিভিন্ন জেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
নীলফামারী: সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জুলাই আন্দোলনের শহীদ রুবেলের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। নীলফামারী ডিসি মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং পরে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শহরের ধোপাডাঙ্গা এলাকায় শহীদ রুবেলের গ্রামের বাড়িতে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা এবং সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোনাজাত শেষে ডিসি নায়িরুজ্জামান বলেন, নীলফামারীর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। তাই শহীদ রুবেলের কবরেই শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়ামাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে নীলফামারীর চারজন সন্তান শহীদ হন।তাদের সম্মানে জেলার চারটি সড়কের নাম তাদের নামে নামকরণ করা হচ্ছে, যা শহীদ পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হচ্ছে। নীলফামারীতে চারজন শহীদ হয়েছিলেন,তাদের মধ্যে তিনজনের কবর এই জেলায় অবস্থিত। এর মধ্যে শহীদ রুবেলের কবর সংরক্ষণ করা হয়েছে, বাকি দুজনের কবর সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে।
যশোর: স্বৈরাচার পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যথাযোগ্য মর্যাদায় যশোরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫ উদযাপন হয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে দিনটি উদযাপন করা হয়। এদিন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।সকালে দিবসের শুরুতে যশোর শহরের বকুলতলায় স্থাপিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা ডিসি আজাহারুল ইসলাম, এসপি রওনক জাহান, বিএনপির কেন্দ্রীয় (খুলনা বিভাগ) ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।এরপর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। এতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সভায় আহত ও নিহত জুলাই যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয় এবং তাদের জীবন-মানের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে জেলা শহরের টাউন হল মাঠে বিএনপি এবং শহরের ঈদগাহ মোড়ে জামায়াতে ইসলামী পৃথক সমাবেশ করে। বিএনপি ও জামায়াতের সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটির নেতারা বক্তব্য দেন। এরপর পৃথক রুটে বিএনপি ও জামায়াতের র্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এসব র্যালিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
মাগুরা: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাগুরায় দিনব্যাপী জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন হয়েছে। এ উপলক্ষে শহরের বরুনাতৈল গ্রামে শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বী ও পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া গ্রামে শহীদ আল-আমিনের কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলসহ জেলায় ১০ জন শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। সকাল ১০টায় জেলা অডিটরিয়ামে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়।
মাগুরা ডিসি মো. অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন এসপি মিনা মাহমুদা, সিভিল সার্জন ডাক্তার শামীম কবির, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাশ্বতী শীল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল কাদের, জেলা তথ্য অফিসার পাভেল দাস, সদর ইউএনও হাসিবুল হাসান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ, সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, জেলা জামায়াতের আমির এমবি বাকের, শহীদ রাব্বীর স্ত্রী রুমি খাতুন, শহীদ আল-আমিনের স্ত্রী সুমি খাতুনসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। সম্মিলন শেষে শহীদ পরিবারের মধ্য ক্রেস্ট, উপহার ও চেক বিতরণ করা হয়।
সার্বিক অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ,সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ,বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান, শিক্ষার্থীসহ সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১১টায় জেলা বিএনপি, জামায়াত ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পৃথকভাবে শহরে বিজয় মিছিল করে। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উপসনালয়গুলোতে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কমনা করে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
শরীয়তপুর: জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শরীয়তপুরে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের সম্মিলন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে পৌরসভার অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মকর্তা, শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। এসময় জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং ১৪ জন শহীদ পরিবার ও আহত ৮৩ জন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয়। এর আগে শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ডিসি মিজ তাহসিনা বেগমের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মো. রেহান উদ্দিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ওয়াহিদ হোসেন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. ইমরুল হাসান, জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি) শরীয়তপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শরীয়তপুর জেলার সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন মিন্টু আদর প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে কর্মসূচির শুরু হয়। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারদের সদস্য এবং জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ডিসি মো. দিদারুল আলম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন এসপি মো. এহতেশামুল হক, সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. নোমান মিয়া, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শংকর কুমার বিশ্বাস। এছাড়া অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যসহ জুলাই যোদ্ধারা বক্তব্য দেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১১ জন শহীদ পরিবারের সদস্য ও ৯৭ জন জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধিত করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
গাইবান্ধা: জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাইবান্ধায় ব্যতিক্রমী ভ্যান-রিকশা র্যালি করেছে শিক্ষার্থীরা। দুপুরে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের আয়োজনে এ র্যালিটি জেলা প্রশাসকের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে অংশ নেন প্রায় আড়াইশত রিকশা ও ভ্যানে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী।
পরে র্যালিটি সরকারি কলেজে গিয়ে শেষ হয় এবং কলেজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা শুরু হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডিসি চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সহকারী কমিশনার সাব্বির আহমেদ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস, গাইবান্ধা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক মাসুদুর রহমান, অধ্যাপক কাইয়ুম আজাদ, শিক্ষার্থী তহমিনা আক্তার, বিন্দি খাতুন, আপন ও রাব্বী প্রমুখ।
রংপুর: জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে রংপুর জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।মঙ্গলবার তথা ৩৬ জুলাই নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের বিপরীতে নবনির্মিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জুলাইয়ের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।
সকাল ৯টায় স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, রংপুর সিটি করপোরেশন, ডিসি মো. রবিউল ফয়সাল এবং এসপি মো. আবু সাঈম। এরপর শহীদ আবু সাঈদের পিতা মকবুল হোসেনের নেতৃত্বে শহীদ পরিবার, আহতরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫’-এর অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শহীদ পরিবার, আহত ও সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিয়ে এক সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১টায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে শাপলা চত্বর থেকে শহীদ আবু সাঈদ চত্বর পর্যন্ত এক র্যালি বের হয়। একই সময়ে নগরীর সদর হাসপাতাল মসজিদ থেকে ‘শুকরিয়া র্যালি’ বের করে উলামা জনতা ঐক্য পরিষদ, রংপুর।
সকাল ১১টায় রংপুর আইনজীবী সমিতির আয়োজনে শহীদ আবু সাঈদসহ সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে টাউন হল চত্বর থেকে রংপুরের সর্বস্তরের ফ্যাসিস্টবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিজয় মিছিল বের হয়। বিকেল ৩টায় সিটি পার্ক মার্কেটের সামনে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর বর্ষপূর্তিতে সমাবেশ ও গণমিছিলের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
বিকেল সাড়ে ৩টায় রংপুর জেলা ও মহানগর জামায়াতের উদ্যোগেও একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।রংপুর মহানগরী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভায় দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপন হয়েছে।