পাথরখেকো ডিসি বোল্ডআউট

সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে সিলেটের ডিসি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে ঢাকায় ফিরিয়ার আনা হয়েছে। তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন মো. সারওয়ার আলম।
বিশেষ প্রতিনিধি : অবশেষে সাদা পাথরখেকো ডিসিকে আউট করেছে সরকার। সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে সিলেটের ডিসি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে ঢাকায় ফিরিয়ার আনা হয়েছে। তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন মো. সারওয়ার আলম। যিনি একসময় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে জনস্বার্থে অনেক অভিযান পরিচালনার জন্য পরিচিতি পেয়েছিলেন।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে সিলেটের জেলাপ্রশাসক পদে রদবদলের কথা জানিয়ে বলা হয়, এ আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।শের মাহবুব ও সারওয়ার দুজনই ২৭তম বিসিএসের কর্মকর্তা। সারওয়ার আলম প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সংযুক্ত) হিসেবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের একান্ত সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।
তাকে সিলেটের ডিসি করে পাঠিয়ে শের মাহবুব মুরাদকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছর অগাস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এক মাসের মাথায় ১২ সেপ্টেম্বর মাহবুব মুরাদকে ডিসির দায়িত্ব দিয়ে সিলেটে পাঠানো হয়।গত এক বছরে সিলেটের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি থেকে পাথর লুটের ঘটনা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। পাথর লুট ঠেকাতে না পারায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “পাথর লুটে যে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে উঠেছে, এর বিপরীতে প্রশাসনের হয় যোগসাজশ করেছে, নতুবা নীরব থেকেছে অথবা দুটোই ঘটেছে। এজন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব এবং দ্রুতই নেব।” সিলেটের নতুন ডিসি সারওয়ার আলম ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ২০০৮ সালে বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন তিনি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে র্যাবে যোগ দিয়ে ভেজালবিরোধী বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আলোচনায় ছিলেন সারওয়ার।২০১৯ সালে ক্যাসিনো বন্ধে অভিযান চালানোর পর করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হাসপাতালগুলোতে চলা অভিযানের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি।২০২০ সালে তখনকার সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের বাড়িতে অভিযানেও নেতৃত্ব দেন সারওয়ার আলম। হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে দেড় বছরের সাজাও দেন তিনি।
প্রায় ছয় বছর ধরে একই দায়িত্বে থাকার পর ২০২০ সালের নভেম্বরে সারওয়ার আলমকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়। পরে তিনি পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হন।