ইসলাম

জামিয়া পটিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা

মহাপরিচালকের বাসায় রাতের আঁধারে হামলা

 

ডেস্ক রিপোর্ট : অদ্য ১-১১-২০২৩ ইং মারকাযু তালীমুল উম্মাহ বনশ্রী ঢাকায় ‘আবনায়ে জামেয়ার পটিয়া ঢাকার সদস্যদের এক বৈঠকে আল-ইসলামিয়া, পটিয়ায় মুখোশধারী সন্ত্রাস বাহিনী দ্বারা মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে জানিয়ে বুধবার কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।

গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া, পটিয়ায় মুখোশধারী সন্ত্রাস বাহিনী দ্বারা মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। মাদরাসার বিভিন্ন দপ্তর ও হুজুরদের রুম ভাংচুর করা হয়েছে। দাপ্তরিক ও ব্যবহারিক বহু মূল্যবান সামগ্রী নষ্ট করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মাদরাসার লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে।

সবচেয়ে মারাত্মক কথা হলো, শূরা কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত জামিয়ার মহাপরিচালকের বাসায় রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে তার সন্তানের উপর নগ্ন আক্রমণ করা হয়েছে এবং তাঁকে অপমান ও অপদস্থ করে বের করে আনা হয় এবং হত্যার হুমকি দিয়ে, তাঁর থেকে জোরপূর্বক ইস্তফানামায় স্বাক্ষর আদায় করা হয়।

কুতুবে জমান হযরত মুফতি আজীজুল হক সাহেব (রহ.)-এর তাকওয়া ও ইখলাসের উপর প্রতিষ্ঠিত উপমহাদেশের এই মকবুল ও মারকাজি দ্বীনী প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি বিশেষের কিছু সংশোধনযোগ্য বিষয়কে কেন্দ্র করে এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করা এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা জামিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন। আমাদের আকাবির ও আসলাফের সম্পূর্ণ নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী একটি ঘৃণ্য কাজ। এর দ্বারা আমাদের মকবুল ও স্বনামধন্য এ কেন্দ্রীয় দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম ও মর্যাদা চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে।
আমাদের আলোকিত জীবন গঠনে আল জামিয়া পটিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। আমরা এই জামিয়ার গর্বিত সন্তান। আজ আমরা অনেকেই শিক্ষাজীবন শেষ করে জীবিকার তাগিদে কর্মস্থলে প্রতিষ্ঠিত। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি।

আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন, সকলেই আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার প্রতিনিধি। তাই প্রাণের প্রতিষ্ঠানের উন্নতি অগ্রগতি এবং সাফল্য আমাদের আন্দোলিত করে। মাদরে ইলমির যে কোন ঘটনা-দুর্ঘটনায় আমাদের হৃদয়-বিবেক নাড়া দিয়ে যায়।সাম্প্রতিক ইস্যুও আমাদেরকে কঠিনভাবে আঘাত করেছে। এই ঘটনার মাধ্যমে জামিয়ার ঐতিহ্য সুনাম সুখ্যাতি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। দেশ বিদেশে জামিয়ার ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শূরা, প্রশাসন ও ওলামায়ে কেরামের প্রতি কয়েকটি দাবি জানানো হয়।

১. আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
২. শূরা ও প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
৩. সঙ্কট সমাধানে মুরুব্বীরা আপাতত যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, এটা কখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। জামিয়ার শুরা পরিষদ আছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত মূল শুরার সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুমোদন হলে আমাদের কোন আপত্তি নাই। অথবা মূল শুরা ভিন্ন কোন সিদ্ধান্ত নিলেও আমাদের কোন আপত্তি নাই। মূল শুরা ছাড়া যেকোন সিদ্ধান্ত সাময়িক। কখনো চূড়ান্ত নয়।

তাই আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার আমার সম্মানিত শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মণ্ডলীর কাছে আরজ পেশ করছি- শুরার সম্মানিত সভাপতি ফাজেলে জামিয়া আল্লামা সুলতান যওক নদভী দা.- এর আহ্বানে মূল শুরার অধিবেশন ডেকে সংকট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য। নীতি বহির্ভূত প্রশ্নবিদ্ধ যে কোন সিদ্ধান্ত আল জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকায় কালিমা লেপন করবে।

উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আতিক উল্লাহ, মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মুফতী কাজী সিকান্দার, মাওলানা জাসিম উদ্দিন, মাওলানা ইকরাম , মাওলানা সাইফুল ্সলাম, মাওলানা যোবায়ের মারূফ প্রমুখ যারা উপস্থিত হতে পারেননি সবাই এতে ঐক্যমত পোষণ করেন। মাওলানা সানাউল্লাহ আজহারী, মুফতী শফিক সাদী, মাওলানা হাফেজ হোসাইন, মুফতী মিজানুর রহমান বোখারীসহ ঢাকার সব আবনা।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button