বিশেষ প্রতিনিধি : এবার মার্কিন শ্রমনীতির টার্গেট পড়তে পারে বাংলাদেশ-এমন নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। এনিয়ে উদ্বিগ্ন সরকারের ওপর মহল। শ্রম অধিকারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নীতির বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশী দূতাবাস কর্মকর্তা। বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব রপ্তানি-২ দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন প্রতিনিধির কাছে চিঠির সত্যতা স্বীকার করেছেন। মন্ত্রণালয়ে চিঠির এন্ট্রি নম্বর-৫৩৬০।
ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার রক্ষায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি পাঠিয়েছে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। শ্রম অধিকার রক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি বা দিকনির্দেশনা ঘোষণার পরে এই চিঠি দেয়া হয়। তবে নতুন মার্কিন শ্রম আইন বৈশ্বিক হলেও অন্যতম টার্গেট বাংলাদেশ। এই আইন ১৬ নভেম্বর ঘোষণা করার পরে ২০ তারিখ পাঠানো হয় চিঠি।
ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্য বিয়ষক শীর্ষ কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার স্বাক্ষরে আসে এই চিঠি। এতে বলা হয়, শ্রম অধিকারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নীতির বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, শ্রম অধিকার বিষয়ক মার্কিন এ নীতি আরেকটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী কর্মীদের ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ড উন্নয়ন ইস্যুতে গত ১৬ নভেম্বর একটি প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম ঘোষণা করেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যারা ইউনিয়ন নেতা, শ্রমিক অধিকার রক্ষাকারী ও শ্রমিক সংগঠনকে আক্রমণ করে, হুমকি দেয়, ভয় দেখায় তাদের জবাবদিহি করতে হবে। যারা এ ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য বিষয়ক জরিমানা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, স্মারকলিপি এর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শঙ্কিত হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। স্মারকলিপিতে শ্রম অধিকার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার পিছনে রাজনীতি রয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন উপায়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করবে। সুতরাং ‘স্মারক’ বাংলাদেশের জন্য একটি সংকেত, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শ্রম সমস্যার অজুহাতে স্মারকলিপিতে বর্ণিত যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারে। স্মারকলিপিটি বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অগ্রাধিকারের সাথে বিবেচনায় নেওয়া উচিত। মার্কিন মেমোরেন্ডামটি এমন এক সময় ঘোষণা দেওয়া হয় যখন ন্যূনতম মজুরিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের তীব্র বিক্ষোভ চলছিল।
পি—১—৪/সি—–
জোটের ভোটে নয়া মেরুকরণ
আসন ভাগাভাগি
সমঝোতা হচ্ছে
ভোটের নয়া মেরুকরণ হচ্ছে। ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন ভাগাভাগি ঘটবে ১৬ ডিসেম্বরে। কারণ, ১৭ ডিসেম্বর জোটগত অবস্থান জনানাতে হবে নির্বাচন কমিশনে। এর আগে দর কষাকষি চলবে জোটের মধ্যে। অন্যদিকে ভোটে আসা নয়া দলগুলির ব্যাপারেও সমঝোতা হতে পারে আসন ভাগাভাগি নিয়ে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কোন দলকে কয়টি আসন ছেড়ে দেবে, তা শেষবেলায় চূড়ান্ত হবে। যে দলগুলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে বা আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে লড়তে চায়, তারা এখন দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেবে। পরে তফসিল অনুসারে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে জোটগত অবস্থান নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, অনেক দলের সঙ্গেই আমাদের আলোচনা চলছে। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও যোগাযোগ করছেন। সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর বোঝা যাবে কোন দলের কয়টি আসনে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন। সেটা বুঝে আসন সমঝোতার আলোচনা শুরু করবে আওয়ামী লীগ।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, আসন সমঝোতার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া অনেক নেতাকেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ করে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা যেসব আসনে প্রার্থী হবেন, সেখানে তারাই নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ফলে ওই সব আসনে এখন যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা সরে দাঁড়াবেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে শরিক দলের নেতাদের জন্য প্রতীক বরাদ্দের আলাদা চিঠি দেবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ জোটগত নির্বাচন করবে কি না, তা নিয়ে গত কয়েক দিনে নানা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। এ নিয়ে ১৪ দলের শরিকদের পক্ষ থেকেও ক্ষোভ জানানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জোট বেঁধে নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন ইঙ্গিত দেন।
১৪-দলীয় জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্স আছে, নির্বাচন জোটবদ্ধ হবে। তাদের কারা কারা প্রার্থী, সেটা আমরা দেখি। আমাদের হাতে কিছু সময় আছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এর মধ্যে আমরা অবজার্ভ করব, মনিটর করব, অ্যাডজাস্টমেন্ট করব, অ্যাকোমোডেট করব। সেখানে যেটা প্রয়োজন, সেটা আমরা করব। স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়টাও ওই রকম। ডামি ক্যান্ডিডেটের বিষয়েও ব্যাপারটা এই রকম। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সবকিছু ফাইনাল হয়ে যাবে।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কোনো কৌশল রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আনার কৌশল আমাদের নেই। তারা এলে আমাদের আপত্তি নেই, তারা এলে স্বাগত। শোনা যায় কেউ কেউ আসতে পারে, কেউ কেউ প্রস্তুতিও নিচ্ছেন নির্বাচনের। সেটা তো মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। সবকিছু দেখে আমরা আমাদের কৌশল নির্ধারণ করব।
১৪ দলের একাধিক সূত্র জানায়, জোট শরিকরা নৌকা নিয়ে ভোট করতে চান, এটা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাস দুয়েক আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে জোটবদ্ধ ভোটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। ফলে তারা এখন শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন। শিগগিরই ১৪ দলকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বৈঠকে বসবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে ঠিক কবে বসবেন, সে দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ৪ ডিসেম্বরের পরে আমাদের সঙ্গে বসবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ওনার সঙ্গে বসলেই আমাদের আসনগুলোর বিষয়টি ফয়সালা হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, ১৪ দলের বাইরে জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপিসহ ছোট দলগুলোর সঙ্গেও আসন নিয়ে আলোচনা চলছে। এ দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা হলেও তারা নিজেদের প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে ছোট দলগুলো তাদের আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে। আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে ছোট দলের নেতারা সেখানে জয় পাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আসনভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে কোনো সাধারণ কৌশল নেই। প্রতিটি আসনের বাস্তবতা বুঝে কৌশল নির্ধারণ হবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রসঙ্গে গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা দেখি কারা কারা চাইছেন। সেটার ওপর আমাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে। আমাদের একটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত আছে। কাজেই এর মধ্যে আমরা এখানে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন-সংশোধন অ্যাকোমোডেশন সবকিছু আমরা করতে পারি।’
আসনভিত্তিক কৌশল ভিন্ন হবে কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটা দলের কৌশল তো থাকবেই। আমরা ইলেকশন করছি। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, আমাদের কৌশলগত দিক তো থাকবেই।’
পি—১৬—–৪/সি——ছবি—–
ভোটে আরো ৪
বিএনপি নেতা
বিশেষ প্রতিনিধি/বগুড়া প্রতিনিধি : একের পর এক নেতা বিএনপি ছেড়ে ভোটের মাঠে নামছেন। এবার আরো ৪ নেতা নির্বাচনে নামলেন। তাও খোদ উত্তরের জনপদ বগুড়া বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটির নেতারা।এরমধ্যে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শোকরানা স্বতন্ত্র প্রার্খী হিসেবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। এছাড়াও রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরকার বাদল এবং জেলা বিএনপির সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি বেগম।বিএনপির এই চার নেতা লড়বেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার চারটি আসন থেকে। ইতিমধ্যে জিয়াউল হক মোল্লা বগুড়া-৪, মোহাম্মদ শোকরানা বগুড়া-১, সরকার বাদল বগুড়া-৭, বিউটি বেগম বগুড়া-২ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
দেশ জুড়ে বিএনপির নেতৃত্ব দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি নেতারা হয় স্বতন্ত্র নয়তো তৃণমূল বিএনপি বা বিএনএম অথবা বিএনএফসহ ভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। তাদের নির্বাচনমুখী তৎপরতায় বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি।
আন্দোলন ডেকে নেতাকর্মীদের মাঠে নামাতে ব্যর্থ বিএনপি এখন দলীয় নেতাদের বহিস্কার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যারাই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন, মনোনয়নপত্র কিনছেন, তাদেরকে দল থেকে বহিস্কার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দলের নেতাদের নির্বাচনে যাওয়া ঠেকাতে না পেরে বিএনপি দলীয় নেতাদের যেভাবে বহিস্কার করছে তাতে দলটির মধ্যে দেউয়ালিয়াপনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাদের অনেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ এ কে এম একরামুজ্জামান।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর যোগ দেন বিএনএম’তে। দায়িত্ব নেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের। মঙ্গলবার এই দুই নেতাকেই দল থেকে বহিস্কার করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে বিএনপি। অথচ তারা আগেই দল ত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগদান করেছেন।
এছাড়া স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের নামে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে গিয়াসের পাশাপাশি তার ছেলে মুহাম্মদ কায়সারের নামেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মাহমুদুল হক।
একই অবস্থা মৌলভীবাজারে। মৌলভীবাজার-১ (জুড়ী-বড়লেখা) আসনে তৃণমূল বিএনপি থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন জুড়ী উপজেলা সেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে তৃণমূল বিএনপি থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন এলডিপি নেতা আবদুল গণি। বিএনপি ছেড়ে ২০০৭ সালে তিনি এলডিপিতে যোগ দেন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। এর আগে আবদুল গণি ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন।
আবদুল গণি ছাড়াও আরো তিন সাবেক এমপি তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন- ব্রাহ্মবাড়িয়া-১ আসনে এস এম সাফি মাহমুদ, নীলফামারী-১ আসনে অ্যাডভোকেট নুর কুতুব আলম চৌধুরী ও ঝিনাহদহ-৪ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নুরু উদ্দিন খান। এর বাইরে আরও অনেক জেলায় বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন বলে জানা গেছে। মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিনে জানা যাবে বিএনপি থেকে কত জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কিংবা ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অবশ্য শুধু যে মাঠ পর্যায়ের বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন, তা নয়, অনেক নেতা বিএনপি ছেড়ে যোগ দিচ্ছেন বিএনএফ, বিএনএম, তৃণমূল বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনে। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকালে জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ও বিএনপির সদস্য বেবী নাজনীন যোগ দিয়েছেন বিএনএম’তে। বিএনপির জোট সঙ্গী বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ইবরাহিম ঢাকার দুটি ও কক্সবাজারের একটি আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
এছাড়াও বিএনপির পর্যায়ের বহু স্থানীয় নেতা নির্বাচনে যেতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। যাদের মধ্যে কয়েকজন জেলা সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকও আছেন। দল শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না গেলে তারা স্বতন্ত্র হিসেবেই নির্বাচন করবেন। দলের বহিষ্কারের বিষয়টিকে আর পাত্তা দিচ্ছেন না এই নেতারা।
তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম যে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে, এদের বেশিরভাগই এক সময়ের বিএনপির নেতা-কর্মী। তথ্যগুলো বাছাই করলে দেখা যাচ্ছে, মাঠের রাজনীতিতে সমর্থন হারাচ্ছে বিএনপি। তৃণমূলের কর্মীরা নিষ্ক্রিয় থাকছে এবং অন্য দলে যোগ দিয়ে নির্বাচনে যাওয়াতে মাঠে শক্তি হারাচ্ছে বিএনপি।
দল ছেড়ে নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বগুড়ার চিকিৎসক জিয়াউল হক মোল্লা বলেন, চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছিলাম। আমাকে কোনো কমিটিতে রাখা হয়নি, অপমানিত হয়েছি। চাকরিতে থাকলে এখন বড় পদে থাকতাম। সেই সুযোগও হারালাম। যেহেতু রাজনীতি করব, তাই ভোটের বিকল্প নেই।
আর তারেক রহমানের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ শোকরানা বলেছেন, এখন আমার বয়স ৭৪। এরপর আর ভোট করার বয়স পারমিট করবে না। এবার একটা সুযোগ এসেছে। আগামীতে আবার ভোট কবে হবে না হবে জানি না। তার ভাষায়, এমপি হলে সম্মান, প্রজন্ম এটা নিয়ে গর্ব করবে। তবে এই নির্বাচনে যাওয়া ভুল হলো কি ঠিক হলো, তা বলবে আগামী প্রজন্ম।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন প্রতিহত করার সিদ্ধান্তে অনড় দলীয় হাইকমান্ডকে তোয়াক্কা না করে, বিভিন্ন আসনে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র তুলছেন বিএনপির নেতারা। আছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও। অন্যদিকে দলছুট বহু নেতা তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমসহ বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন।তিনি বলেন, বিএনপি এ সকল নেতাদের একের পর এক বহিষ্কার আদেশ দিচ্ছে। এদিকে রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী কিছুদিনে আরও বিএনপি নেতা নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারেন।
পি—১৬—–৩/সি—ছবি—–
রংধনু গ্রুপ রফিকুলের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
শতকোটি দুর্নীতির
অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার : জমি বন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। জালিয়াতি করে ব্যাংকের নিকট বন্ধকী থাকা সেই জমিও ২০২২ সালের বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। ফলে, বিপাকে পড়েছেন ব্যাংক ও জমির ক্রেতা উভয়।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোটার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলা হয়। আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ড. সূফি সাগর সামস বলেন, গত জুন মাসে জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করা জমির দলিল বন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জনগণের ২৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অথচ রফিকুল ইসলাম ২০২২ সালের শেষ দিকে এসব জমি বিক্রি করে দেন। ঋণের টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা কিছুই জানে না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ব্যাংক থেকে তিন দফায় এসব অর্থছাড় করা হলেও প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কোথায় বিনিয়োগ হয়েছে সেই তথ্য নিশ্চিত না হয়ে অনৈতিকভাবে ঋণের তৃতীয় কিস্তির অর্থছাড় করেছে ব্যাংক। একটি সংঘবদ্ধ চক্র অব্যাহতভাবে জনগণের রক্ষিত ব্যাংকের টাকা লুট করে যাচ্ছে। দেশ বিরোধী এই অপকর্ম অনতিবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
রফিকুল ইসলামের অবৈধ সম্পদ অর্জন, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দ্রুত অনুসন্ধান ও বিচারের দাবি জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানানো হয়।
ড. সূফি সাগর সামস বলেন, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিক ও তার ছেলে মেহেদী হাসান দীপু, কাউসার আহমেদ অপু ও মালিহা হোসেন জোয়ার সাহারা, ভাটারা ও গুলশান মৌজার ৩৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ জমি বন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০ কোটি ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ভাটারা মৌজার ৪টি প্লটে রফিকুল ইসলামের বিক্রি করে দেওয়া ৯৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ জমিও রয়েছে। তিনি বলেন, রফিকুল ইসলামের ভাটারা মৌজার ই ব্লকের ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ ও ৪৮৯ প্লটের ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, ৫০৭, ৫০৮, ৫১১ ও ৫১২ প্লটের ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও ৫৩৫ প্লটের ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ, ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও ৫৫৮ প্লটের ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ জমি রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই জমি ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিলেও রফিকুল ইসলাম তা পরিশোধ করে দেন একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর। এসব জমির মধ্যে ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ ও ৪৮৯ প্লটের ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ ও ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও ৫৩৫ প্লটের ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ আবুল কাশেম গংদের কাছে বিক্রি করে দেন রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও ৫৫৮ প্লটের ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন ইমরান করিমের কাছে। ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তামান্না সুলতানার কাছে ৫০৭, ৫০৮, ৫১১ ও ৫১২ প্লটের ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেন রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া আবুল কাশেম গংদের মালিকানাধীন ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং তামান্না সুলতানার নামে ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি। এ ছাড়াও আবুল কাশেম গংদের মালিকানাধীন ২২ দশমিক ৭০ শতাংশের আরেকটি প্লটের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে চলতি বছরের ১৯ মার্চ।
ড. সূফি সাগর সামস বলেন, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বসুন্ধরা শাখা অবৈধভাবে ঋণ দেওয়া জমিতে বর্তমানে অন্য কোম্পানি ও মালিকের সাইনবোর্ড ঝুলছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে রফিকুল ইসলামের বন্ধক দেওয়া ৪টি প্লটের মালিকানার বিষয়ে গুলশান রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশ্চিত করেছে বন্ধককৃত জমি বর্তমানে রফিকুল ইসলামের মালিকানায় নেই।
তিনি বলেন, তামান্না সুলতানার জমিতে ১৪ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ শুরু করেছে সুবাস্তু প্রপার্টিজ। এ ছাড়া ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ ও ৪৮৯ প্লটের ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও ৫৩৫ প্লটের ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ আবুল কাশেমের মালিকানাধীন ড্রিমওয়ে হোল্ডিংস লিমিটেড বহুতল ভবন নির্মাণের সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখেছে। আর ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও ৫৫৮ প্লটের ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ জমি ইমরান করিম সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘিরে রেখেছেন।
ড. সূফি সাগর সামস বলেন, রংধনু গ্রুপের দখলে রয়েছে অসংখ্য জমি। মানুষের জমি দখল, ব্যাংকের টাকা লুটপাট, প্রতারণা, জালিয়াতি করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এক সময়ে বাড্ডার সামান্য ডিম বিক্রেতা রফিক। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়া রফিকের অবৈধ সম্পদের অনেকাংশই বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যথার্থভাবে তার সম্পদের হিসেব করলেই বের হয়ে আসবে প্রকৃত সত্য।
তিনি বলেন, রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের আলোচিত-সমালোচিত চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রাতারাতি টাকার কুমির হয়ে গেলেও স্থানীয়দের কাছে তিনি আন্ডা রফিক হিসেবেই বেশি পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, মিডিয়ায় বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করেন রফিক। ২০১৮ সালে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মিস আয়ারল্যান্ডখ্যাত মডেল ও অভিনেত্রী প্রিয়তিকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম রফিক। নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাস ও ভিডিও বার্তায় সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন প্রিয়তি।
আন্ডা রফিক বাহিনীর ত্রাসের রাজত্বে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা। জমি দখল করতে দিনে-দুপুরে প্রায়ই হামলা চালানো হয় স্থানীয় নিরিহ মানুষের বাড়িঘরে। বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় মালামাল। রাতের বেলা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যুবতী মেয়েদের তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অনেকে পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ফেলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের সত্ত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে একাধিক হত্যা মামলাও।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই অনিয়ম, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি এক হাতে হয় না। একটি সংঘবদ্ধ চক্র আছে। তারা এসব করছে। বিচ্ছিন্ন ঘটনাও নয়, নিয়মিত ঘটছে। এসব অপকর্ম বন্ধ করতে হলে সরকারকে কঠোর হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদককে আরো কঠোর হতে হবে। বাস্তবিক অর্থে দুদককে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স হতে হবে। আমরা চাই রফিকুল ইসলামের সকল দুর্নীতি উদঘাটন করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
পি—১৬—-৪/সি—-ছবি—–ঢাবি লোগো—
যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দিলেন ছাত্রী
ঢাবি অধ্যাপকের
অনৈতিকা
ঢাবি প্রতিনিধি : ফের ঢাবি’র আরেক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অনৈতিকার কান্ড ঘটলো। নিজ কক্ষে ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. গোলাম আজম ।
অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রী নিজে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ৯ সেপ্টেম্বর ঘটলেও এটির সুষ্ঠু তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী। অভিযোগ দিতে দেরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ছাত্রী বলেন, ঘটনার পর মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই। তাই লিখিত অভিযোগ দিতে দেরি হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর উপাচার্য কী জানিয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার আমাকে বলেছেন তদন্ত কমিটি গঠন হলে আমি কথা বলতে পারব কি না। আমি, হ্যাঁ বলেছি। এর পর আমি সেটা জমা দিয়ে চলে আসি। লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর আবাসিক হলের বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষে অন্য একজন শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেই শিক্ষক সেখানে না থাকায় আমি অফিস কক্ষের বাইরে দাঁড়াই। ওই সময় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আমার কাছে জানতে চান, আমি কেন এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমি আমার সমস্যার কথা জানালে তিনি আমাকে তার কক্ষে ডেকে নেন। তখন আমি স্যারের কক্ষে যাই। স্যার আমাকে প্রয়োজনীয় দুই একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন।
লিখিত অভিযোগে ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, তিনি আমাকে নানান রকমের সাহায্য করার কথা বলেন এবং আমাকে বলতে থাকেন আমি যেন একা তার সঙ্গে দেখা করি এবং বই নেই তার কাছে গিয়ে।
তা ছাড়া তার বিষয়ে বা তার সাহায্যের বিষয়ে যেন কাউকে কোনো কথা না বলি।
এর পর তিনি আমার সেল ফোন নম্বার নেন এবং এক রকম জোর করেই আমার মেসেঞ্জারে নক করেন। অভিযোগপত্রে ছাত্রী উল্লেখ করেন, তার কথার ধরণ এবং অঙ্গভঙ্গি আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে আমি উঠে দাঁড়াই। তখন তিনি নিজেও তার নিজ আসন ছেড়ে আমার কাছে উঠে আসেন এবং আমাকে যৌন হয়রানি করেন।
তিনি বারবার বলতে থাকেন, তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তিনি আমার শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করেন। আমি ভয়ে তার কক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই। ছাত্রী জানান, ঘটনার সময় সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী তাকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে দেখেন। এর পর তিনি ভয়ে আর মেসে ফিরে যাননি।তিনি বলেন, এর পর আমি ইনিস্টিটিউটের ক্যান্টিনে কিছু সময় অবস্থান করি। তখন ওই শিক্ষক আমাকে ফোন করে তার সঙ্গে দুপুরের খাবার অথবা হালকা নাস্তা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব জানান। তখনও আমাকে বারবার এই বিষয়ে যেন কাউকে না জানাই, তা সাবধান করতে থাকেন।
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. গোলাম আজম এবং ওই অধ্যাপকের ফোনে সংযোগ না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, পেয়েছি কি পাইনি সেটা আগামী সিন্ডিকেট মিটিংয়ে দেখা যাবে।