মানিলন্ডারিং রিং লিডাররা বহাল তবিয়তে
শফিক রহমান : এক সময়ের তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ পাওয়া বাংলাদেশীরা এখন টাকা পাচারকারী। ব্যাবসা বাণিজ্যের নামে এই বাংলাদেশীরা ব্যাংক থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা পাচার করে দিয়েছে বিদেশের ব্যাংকে। এই টাকা পাচারে বাংলাদেশী ধনকুবেররা ফেঁসে গেলেও তাদের সহযোগী ব্যাংকাররা এখন বহাল তবিয়তে বাংলাদেশের মাটিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে। টাকা পাচারকারীদের অনেকে দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও অনেকেই রয়েছেন দেশে। এদের অনেকেই টাকার অবৈধ নেশায় গড়ে তুলেছেন অবৈধ কেসিনো, অনলাইন কেসিনো। এসব চলছে টাকা পাচারকারীদের প্রচ্ছন্ন ছত্রছায়ায়।দেশের অভিজাত এলাকার রক্ষকরা সব জেনেও টুপাইসের লোভে সব নিশ্চুপ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্বজুড়ে বহুল আলোচিত ‘প্যারাডাইস পেপার্সে’ নাম আসা ২৯ বাংলাদেশির মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে এসেছে চট্টগ্রামের দুই শিপিং ব্যবসায়ীর নাম। অন্যদিকে ‘পানামা পেপার্সে’ এসেছে চট্টগ্রামভিত্তিক তিনটি কোম্পানির এক কর্ণধারের নাম। আরও ৪০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই তিনজনের নামও হাইকোর্টের হাতে তুলে দিয়ে দায় সেরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশের কে কত টাকা বিদেশে পাচার করেছে— হাইকোর্ট জানতে চাওয়ার নয় মাস পর কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা দেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে জানালো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ১৪টি প্রতিষ্ঠান ও ২৯ ব্যক্তির তালিকা আদালতে দাখিল করা হয় রোববার (৫ ডিসেম্বর)। এর মধ্যে চট্টগ্রামভিত্তিক তিন ব্যবসায়ীর নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি নাম এসেছিল ‘পানামা পেপার্সে’। অন্যদিকে ‘প্যারাডাইস পেপার্সে’ এসেছিল ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম।
টাকা পাচারের নথি থেকে-
২০১৬ সালের মে মাসে সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন পানামার বিপুলসংখ্যক নথি ফাঁস করে দেয়, যা ‘পানামা পেপার্স’ নামে পরিচিতি পায়। বিশ্বের ধনী আর ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা কোন্ কৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ছেন সেই তথ্য বেরিয়ে আসে এসব নথি থেকে। এই তালিকায় ১৪ বাংলাদেশির নাম উঠে আসে। এরপর ২০১৭ সালের শেষ দিকে বারমুডার আইন সেবাপ্রদানকারী একটি সংস্থার গ্রাহকদের ১ কোটি ৩৪ লাখ নথি ফাঁস করে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠনটি। সেখানে এসেছিল বাংলাদেশের ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম।
টাকা পাচারকারী-ফয়সাল-
বিদ্যুতের কারবারি করে টাকা পাচারেও পটু এই ব্যাক্তি।বিদেশে অর্থপাচার করে বহুল আলোচিত পানামা পেপার্সে নাম আসা ১৪ বাংলাদেশির অন্যতম ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। ২০১৪ সালে ফয়সালের প্রতিষ্ঠিত বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে ফার্নেস অয়েল জ্বালানিভিত্তিক ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চট্টগ্রামে স্থাপনের অনুমতি পায়। এরপর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নে কর্ণফুলী নদীর তীরে প্রায় ১৫ একর জায়গায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের দুটি সহযোগী বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর একটি বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার এবং অন্যটি কর্ণফুলী পাওয়ার লিমিটেড। দুটিই ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদেশে অর্থপাচারে আলোচিত ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী চট্টগ্রামভিত্তিক এই তিনটি কোম্পানিরই পরিচালক।
টাকা পাচারকারী-বেঙ্গল-শামস
শিপিংয়ের মালেক-আউয়াল
চট্টগ্রাম থেকে টাকার পাচারের তাালিকায় প্যারাডাইস পেপার্সে চট্টগ্রামের দুই সহোদর ছিলেন।এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বেঙ্গল শিপিংয়ের মালেক এবং শামস শিপিংয়ের আউয়াল। প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা ২৯ বাংলাদেশির মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে এসেছে চট্টগ্রামের দুই শিপিং ব্যবসায়ীর নাম। এদের একজন হলেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের বেঙ্গল শিপিং লাইনসের মালিক মোহাম্মদ এ মালেক এবং চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজার মাওলানা শওকত আলী রোডের বাসিন্দা শামস শিপিং লিমিটেডের কর্ণধার মোহাম্মদ এ আউয়াল। দুই ব্যবসায়ীই সহোদর।
এর মধ্যে মোহাম্মদ এ আউয়াল মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) চট্টগ্রামের পৃষ্ঠপোষক পরিচালক এবং চট্টগ্রামে ফিলিপাইন প্রজাতন্ত্রের কনসাল জেনারেল। অন্যদিকে মোহাম্মদ এ. মালেক চট্টগ্রামভিত্তিক অ্যাসোসিয়েটেড ট্রেডার্স অ্যান্ড মেরিনস লিমিটেড, অ্যাডামস গার্মেন্টস সোর্সিং লিমিটেড, বেনকন সিট্রান্স লিমিটেড, খলিল অ্যান্ড সন্স লিমিটেড এবং প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডেরও পরিচালক।
১৪ টাকা পাচারকারী পানামা’য়-
১৪ টাকা পাচারকারীর নাম উঠেছিল পানামা পেপার্সে। এরা হচ্ছে, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী, সেতু কর্পোরেশনের পরিচালক উম্মে রুবানা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, গুলশান-২ এর আজমত মঈন, বনানীর সালমা হক, এসএম জোবায়দুল হক, বারিধারার সৈয়দ সিরাজুল হক, ধানমন্ডির দিলীপ কুমার মোদি, শরীফ জহির, গুলশানের তারিক ইকরামুল হক, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, পরিচালক খন্দকার মঈনুল আহসান শামীম, আহমেদ ইসমাইল হোসেন ও আখতার মাহমুদ।
২৯ টাকা পাচারকারী প্যারাডাইসে
২৯ জন বাংলাদেশী টাকা পাচারকারীর নাম ছিল প্যারাডাইস পেপার্সে। এদের মধ্যে রয়েছে, বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও তার স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল,ছেলে তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল, তাজওয়ার মো. আউয়াল, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোগল ফরিদা ওয়াই ও শহিদ উল্লাহ, ঢাকার বনানীর চৌধুরী ফয়সাল, বারিধারার আহমাদ সামির, ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড ও ভেনাস ওভারসিজ কোং-এর মুসা বিন শমসের,ডাইনামিক এনার্জির ফজলে এলাহী, ইন্ট্রিপিড গ্রুপের কেএইচ আসাদুল ইসলাম, খালেদা শিপিং কোম্পানির জুলফিকার আহমেদ, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম তাজুল, চট্টগ্রামের বেঙ্গল শিপিং লাইনসের মোহাম্মদ মালেক, ঢাকার সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানির শাহনাজ হুদা রাজ্জাক, ওসান আইস শিপিং কোম্পানির ইমরান রহমান, শামস শিপিং লিমিটিডের মোহাম্মদ এ আউয়াল, ঢাকার উত্তরার এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপের ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম, পদ্মা টেক্সটাইলের আমানুল্লাহ চাগলা, রাশিয়ার নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্টের মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, মাল্টার মোহাম্মদ রেজাউল হক, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ কামাল ভূঁইয়া, তুহিন-সুমন, সেলকন শিপিং কোম্পানির মাহতাবা রহমান, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টান্যাশনালের ফারুক পালওয়ান ও আয়ারল্যান্ডের গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেমের মাহমুদ হোসাইন।
বউ-জামাই-টাকা পাচারকারী
এর আগে বিদেশে বিভিন্ন সময়ে টাকা পাচারে জড়িত চট্টগ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম বেরিয়ে আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে। সেখানে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের বাসিন্দা যাদের নাম তালিকায় এসেছে, তারা সকলে একই পরিবারের। এরা গত বছর দেশ থেকে পালিয়ে লন্ডন চলে গেছেন। টাকা পাচারে জড়িত একমাত্র যে প্রতিষ্ঠানের নাম সিআইডির প্রতিবেদনে এসেছে, সেটিও ওই একই পরিবারের মালিকানাধীন।এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও দুবাইয়ে টাকা পাচার করেছেন— এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে সিআইডির সবশেষ প্রতিবেদনে।
টাকা পাচারের তালিকায় রয়েছেন চট্টগ্রামের খুলশীর নাজমুল আবেদীন ও তার স্ত্রী সোহেলা আবেদীন এবং পাহাড়তলী এলাকার একেএম জাহিদ হোসেনসহ অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচজন। জাহিদ হোসেন নাজমুল আবেদীনের শ্বশুর। এছাড়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাম রয়েছে চট্টগ্রামের ‘এ অ্যান্ড বি আউটারওয়্যার অ্যান্ড নর্ম আউটফিট অ্যান্ড একসেসরিজ লিমিটেডের’। এই প্রতিষ্ঠানটিও নাজমুল আবেদীন ও তার পরিবারের মালিকানাধীন।
সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মোট ৪০ কোটি ৮৫ লাখ ১০ হাজার টাকা বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন।বাংলাদেশের কত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য বিদেশি ব্যাংকে কত টাকা পাচার করেছেন, হাইকোর্ট সে বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়ার পর সিআইডি এই প্রতিবেদন দিয়েছিল।
টাকা পাচারের তালিকায় নাম আসা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নাজমুল আবেদীন তার স্ত্রী ও শ্বশুরসহ গত বছরের মাঝামাঝিতে লন্ডন পালিয়ে যান। চট্টগ্রামের ইপিজেডে অবস্থিত তার দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে চার ব্যাংকের আটকে রয়েছে ২৪৫ কোটি টাকা।চট্টগ্রামের খুলশী এলাকার ৬ নম্বর রোডের বে গ্রিন ভ্যালি ভবনের বাসিন্দা মোস্তফা আনোয়ার হোসেনের ছেলে নাজমুল আবেদীন ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম ইপিজেডে এঅ্যান্ডবি আউটওয়্যার নামে একটি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মধ্য দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।
২০১৭ সালের শেষ দিকে তিনি তার স্ত্রী সোহেলা আবেদীন ও শ্বশুর একেএম জাহিদ হোসেনের নামে কিনে নেন নর্ম আউটফিট অ্যান্ড এক্সেসরিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তী সময়ে কোল্ড প্লে স্কুল প্রোডাক্ট নামে প্রতিষ্ঠা করেন আরেকটি কারখানা।এই তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নাজমুল আবেদীন ব্যাংক থেকে ঋণ নেন দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে। এর মধ্যে এঅ্যান্ডবি আউটওয়্যারের কাছে ব্র্যাক ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার পাওনা ১০২ কোটি টাকা। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট পাবে ৬০ কোটি টাকা।
এছাড়া নর্ম আউটফিটের কাছে ওয়ান ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা ৫৪ কোটি এবং এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা পাবে ২৯ কোটি টাকা। এর বাইরে ওই তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে স্থানীয় সরবরাহকারীরা পাবেন আরও অন্তত ৫০ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নাজমুলের মালিকানাধীন এঅ্যান্ডবি আউটওয়্যার ও নর্ম আউটফিট লিমিটেড চলতি বছরের শুরুতে নিলামের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।আদালতের আদেশে গত বছরের ২৪ অক্টোবর ঢাকা ও চট্টগ্রামে তদন্তাধীন সাত মামলায় বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৮ টাকা পাচারের তথ্য হাইকোর্টকে দেয় সিআইডি।
এর মধ্যে রয়েছেন যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর একেএম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদের নাম। তালিকায় এছাড়া রয়েছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারীর রাজীব হোসেন রানা, নেত্রকোনার বারহাট্টার জামাল, কুমিল্লার দাউদকান্দির শরিফুল ইসলাম ও আউলাদ হোসেন, ফেনীর ছাগলনাইয়ার এনামুল হক, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মো. শাহজাহান বাবলু।সিআইডি জানিয়েছে, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে ২৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা পাচারের তথ্য মিলেছে। অন্যদিকে যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯৮ টাকা পাচারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর একেএম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদ ২৪ কোটি ৯৯ লাখ ৮২ হাজার ৩৫৯ টাকা, ফরিদপুরের রাজীব হোসেন রানা ও নেত্রকোণার বারহাট্টার জামাল সিঙ্গাপুরে ৮১ লাখ টাকা, কুমিল্লার দাউদকান্দির শরিফুল ইসলাম ও আউলাদ হোসেন ৮৩ লাখ টাকা, কুমিল্লার মো. শাহজাহান বাবলু ২১ লাখ টাকা পাচার করেছেন বলে সিআইডির ভাষ্য।
টাকা পাচারের ঘটনায় চট্টগ্রাম ও ঢাকার সাতটি মামলা তদন্তাধীন উল্লেখ করে সিআইডি জানিয়েছে, টাকা উদ্ধারের পদক্ষেপ হিসেবে সংশ্লিষ্ট দেশ সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দুবাই ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে।