যুথী-কান্ডে সরকারে ইমেজ সংকট!
নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, যারা এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করেছে তাদের অপরাধ অমার্জনীয়। আদালত প্রাঙ্গণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে কার কী দায়, তা নিয়ে আমি কোনো ব্যক্তিবিশেষের কথা উল্লেখ করতে চাই না।
কোর্ট রিপোর্টার : সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে যুথী কেন্দ্রীক যুবলীগের কর্মকান্ডে সরকারের ইমেজ সংকট প্রকট আকার ধারন করেছে। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ পদে জয়ী হয়েছে সরকার সমর্থক আইনজীবীদের প্যানেল। কিন্তু বিতর্ক চলছে সমানতালে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠনের এই নির্বাচনে সংঘর্ষময় কর্মকান্ড সরকারকে বিব্রত করে দিয়েছে। অনেকে বলেছেন, ভোট গণনা ও ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এ কারণে শুধু আদালত অঙ্গন নয়, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডও ব্রিবত ও চরম ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে।
আওয়ামী আইনজীবী সমিতির একাধিক নেতা বলছেন, সরকারের জন্য অস্বস্তিকর এই পরিস্থিতি তৈরির পেছনে যার নাম এসেছে, তিনি সরকার পক্ষেরই আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী। যিনি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। এ নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী প্যানেলের বাইরে সম্পাদক পদে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তিনি। তার নির্দেশেই সেদিন গভীর রাতে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তাকে বিজয়ী ঘোষণা করাতে যুবলীগের কিছু নেতাকর্মী জোর করে কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন। এ সময় হামলায় আহত হন একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ অন্তত সাত আইনজীবী।
শুধু তাই নয়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধানকে চাপ দিয়ে ভোট গণনার আগেই নাহিদ সুলতানা যুথীকে সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়। অ্যাডভোকেট যুথীর কর্মকাণ্ডে বিএনপি-জমায়াত সমর্থক প্রার্থী ও তাদের এজেন্টরা উসকানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একজন দায়িত্বশীল নেতার স্ত্রীর এই ভূমিকায় চটেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনায় দলের শীর্ষ নেতারা ক্ষুব্ধ। আর এ কারণেই অ্যাডভোকেট যুথীকে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত শুক্রবার রাতে তার বাসায় অভিযান চালায়। কিন্তু তাকে না পেয়ে তার বাসা থেকে চারজন আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় বিএনপিপন্থী প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকেও গ্রেপ্তার করে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই মামলার যেসব আসামি এখনো পলাতক, তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সংবাদমাধ্যমে বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত।যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম জানান, উচ্চ আদালতের মতো জায়গায় এমন ঘটনা হওয়া উচিত হয়নি। বিষয়টি এখন আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে গেছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এখন এটার সমাধান হওয়া উচিত।
আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, যারা এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করেছে তাদের অপরাধ অমার্জনীয়। আদালত প্রাঙ্গণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে কার কী দায়, তা নিয়ে আমি কোনো ব্যক্তিবিশেষের কথা উল্লেখ করতে চাই না।