খেলা

তানজিদ তামিম ও রিশাদের ৬, ৬, ৪, ৪, ৪ ঝড়ে সিরিজ টাইগারদের

‘কনকাশন সাব’ হয়ে বিজয়ের সাথে ওপেনিংয়ে নেমেই তানজিদ তামিম নিজের জাত চেনালেন। তার অনবদ্য ৮৪ ও শেষে রিশাদ হোসেনের ১৮ বলে খেলা ৪৮ রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশের ৪ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়।

 

স্পোর্টস রিপোর্টার/চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : তানজিদ তামিম ও রিশাদ ঝড়ে সিরিজ জিতল টাইগাররা।চট্টগ্রামের সাগরিকায় আজকের ম্যাচের শুরুর একাদশে ছিলেন না তানজিদ হাসান তামিম। তবে সৌম্য সরকারের চোট কপাল খুলে দেয় তার। ‘কনকাশন সাব’ হয়ে বিজয়ের সাথে ওপেনিংয়ে নেমেই তানজিদ তামিম নিজের জাত চেনালেন। তার অনবদ্য ৮৪ ও শেষে রিশাদ হোসেনের ১৮ বলে খেলা ৪৮ রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশের ৪ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়। সেই সাথে সিরিজটিও জিতে নিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

সোমবার (১৮ মার্চ) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৩৬ রানের লক্ষ্য ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌছে টাইগাররা। টস জিতে আগে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা জানিথ লিয়ানাগের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারের শেষ বলে ২৩৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাবে কনকাশন বদলি হিসেবে নামা তানজিদ হাসান তামিমের ৮১ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের পর রিশাদ হোসেনের ঝড়ে ৫৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।

ওয়ানডের হিসেবে স্বল্প রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তানজিদ হাসান তামিম আগ্রাসী খেলার ব্রত বেছে নেন। সৌম্য সরকার চোট পাওয়ায় ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেননি তিনি। শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলে ওপেনিং জুটিতেই বিজয়ের সাথে ৫০ রানের জুটি গড়েন তিনি।

সঙ্গী হিসেবে এনামুল হক বিজয়ের প্রত্যাবর্তন অবশ্য পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ। ২২ বলে খেলে করেছেন কেবল ১২। তিনে নামা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১ রানের বেশি করতে পারেননি। থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। আগের ম্যাচে ৯৬ রানের হার-না-মানা ইনিংস খেলা হৃদয় আজ উইকেট হারান ব্যক্তিগত ২২ রানে। তার বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (১) প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন দ্রুত। দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা।

টাইগারদের উইকেট হারানো মিছিলে অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন তানজিদ তামিম। ৫১ বলে পেয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চাশ। কনকাশন হিসাবে ম্যাচে নামার সুযোগ পেয়ে নিজের সর্বোচ্চটা উজাড় করে দেন তামিম। দাপুটে ব্যাটিংয়ে ছিলেন সেঞ্চুরির পথেই, কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ৮১ বলে যখন তানজিদের নামের পাশে ৮৪ রান ছয় হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে হলেন ক্যাচ। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা তানজিদ তামিম ছুঁয়েছেন আরও এক মাইলফলক। ওয়ানডেতে কনকাশন সাব হয়ে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এখন তার।

এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ এসে মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গ দিয়ে দলকে টানতে থাকেন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে মুশির সঙ্গে জুটিতে স্কোরবোর্ডে আসে ৪৮ রান। ব্যক্তিগত ২৫ রানে মিরাজ সাজঘরে ফিরলে রিশাদ হোসেন এসেই হাঁকান ছক্কা। পরে আরও এক ছয় ও ৪ হাঁকিয়ে মোট ১৬ রান খরচ করান হাসারাঙ্গাকে। বল হাতে প্রথম বলেই উইকেট আর ব্যাট হাতে নেমে প্রথম বলেই ছক্কা রিশাদের। এই রিশাদই ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোমেন্টাম, জয়ের লক্ষ্য করে দেন সহজ।

হাসারাঙ্গার পরের ওভারে ৬, ৬, ৪, ৪, ৪ হাঁকিয়ে আরও ২৪ রান তুলে নেন। তাতেই লক্ষ্যের খুব পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক। মাত্র ১৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৮ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলে জয়ের অন্যতম নায়ক রিশাদ হোসেন। মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থাকেন ৩৭ রানে।

এদিকে টসে হেরে আগে বোলিংয়ে নেমে বাংলাদেশ রীতিমতো ধ্বংসস্তূপ বানিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কান ব্যাটিং লাইনকে। তবে শেষ পর্যন্ত ২৩৫ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস, একা হাতে লড়াই চালিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পান জানিথ লিয়ানাগে। ১০১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button