শিক্ষকদের টাকা দিচ্ছে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ
বিশেষ প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চলমান নির্মাণাধীন বিভিন্ন ভবনের লিফট কিনতে প্রমোদ ভ্রমণে ফিনল্যান্ডে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ঢাবি শিক্ষকদের এই প্রমোদ ভ্রমণের টাকা দিচ্ছে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ । বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ শনিবার (৪ মে) ভোরে তারা ফিনল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অথচ এর আগে একই প্রক্রিয়ায় লিফট কিনতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছয় কর্মকর্তার তুরস্কযাত্রা বাতিল করা হয়েছিল। ওই সময় ব্যাপক সমালোচনার মুখে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে ওই সফর বাতিল করা হয়েছিল। চক্রটি এসব মাথায় রেখে অতি গোপনে কার্য সম্পন্ন করে ফেলেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, লিফট কেনার নামে এই প্রমোদ ভ্রমণ এর টাকা নাকি দিচ্ছেন লিফট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিফট কিনতে প্রতিনিধি দলের বাকি সদস্যরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম তৌফিক হাসান এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের পরিচালক জাবেদ আলম মৃধা।
রেজিস্ট্রার ভবনের তথ্য অনুযায়ী, প্রি–শিপমেন্ট ইনস্পেকশনের (পিএসআই) অংশ হিসেবে এ প্রতিনিধি দল ফিনল্যান্ড যাচ্ছেন। ফিনল্যান্ড যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ব্যয় বহন করবে না। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে ব্যয়ের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
রেজিস্ট্রার ভবন আরও জানায়, রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (আরএমআইএল) এই প্রকল্প নিয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলকে লিফট দেখাতে নিয়ে যাচ্ছে। লিফট দেখার পর তাঁরা সেখানে স্বাক্ষর করবেন, ঘটনাস্থলে যে লিফট দেখবেন সেই লিফটই সরবরাহ করা হচ্ছে কিনা, নাকি নকল কোনো পণ্য দেওয়া হয়েছে তা পরবর্তী সময়ে যাচাই করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, হলসহ বিভিন্ন ভবনের জন্য ১৭টি লিফট কেনার জন্য এ প্রতিনিধি দল যাচ্ছে।উপ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের ছুটি মঞ্জুরের চিঠি থেকে জানা গেছে, চলতি ২ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত ৮ দিনের ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। এর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কোনো আর্থিক খরচ বহন করবে না।
ঢাবির রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০১১ সালে জারিকৃত এক স্মারকের ক্ষমতাবলে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর এক পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য আপনাকে (উপ–উপাচার্য) বিদেশ গমনের অনুমতি দিয়েছেন। আপনাকে আরও জানানো যাচ্ছে যে, আপনার বিদেশে অবস্থানকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালকে প্রো–ভাইস চ্যান্সেলরের (শিক্ষা) দায়িত্ব পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে উপ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, ফিনল্যান্ডে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কোনো খরচ বহন করছে না।