অপরাধজেলার খবর

জঙ্গি অস্ত্র আতংক-বান্দরবানে মিলেছে ড্রামভর্তি অস্ত্র-বোমা সরঞ্জাম

 

 

বান্দরবান প্রতিনিধি : গাজীপুর থেকে জঙ্গি ধরে বান্দরবানে নিয়ে ড্রামভর্তি অস্ত্র-বোমার সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। জঙ্গি আব্দুর রহিম এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গহিন বন থেকে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ জানিয়েছে আব্দুর রহমানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গহিন বন থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগে রহিমকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গত বুধবার গাজীপুর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সিটিটিসির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তাঁর ভাষ্য, গ্রেপ্তার আব্দুর রহিম (৩২) জামাতুল আনসারের ‘প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী’।

পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, পাহাড়ে জঙ্গি সংগঠনের খবরে গত বছর যৌথ অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম আত্মগোপন করেন। গত বুধবার গ্রেপ্তারের পর তাঁকে নিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অভিযান চালানো হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গহিন বনে মাটিতে পুঁতে রাখা ড্রামে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়।

আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অপহরণ, অবৈধ অস্ত্র, বনভূমি ধ্বংসসহ বিভিন্ন অভিযোগে নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের রামু থানায় ১২টি মামলা রয়েছে বলে জানান মো. আসাদুজ্জামান। আব্দুর রহিমের অস্ত্রের উৎসের বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে এই অস্ত্রের উৎস কোথায়। দেশের বাইরে কারও সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। যেহেতু রাসায়নিক পাওয়া গেছে, সে জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, কোনো জায়গায় তাঁরা এসব বোমা সরবরাহ করেছেন কি না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৩ জুন জামাতুল আনসারের ‘মাস্টারমাইন্ড’ শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে তাঁর সহযোগী ইয়াসিন এবং অস্ত্র সরবরাহকারী কবির আহাম্মদকে গত বছরের ৮ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের সংগঠনটির প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-গুলির উৎস, অর্থায়ন সম্পর্কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শামিন মাহফুজ জানিয়েছিলেন, পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) তাদের সদস্যদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেবে-এমন একটা চুক্তি হয়েছিল। স্থানীয় অপরাধী কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিমের সঙ্গেও তাঁদের সংগঠনের নেতারা যোগাযোগ করেন। তাঁরাও জঙ্গি সংগঠনটিকে অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ধর্মান্তরিত মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার আড়ালে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার গড়ে তোলেন শামিন মাহফুজ। পরে কবির ও রহিমকে সংগঠনে যুক্ত হওয়ার ‘দাওয়াত’ দেন। তাঁরা অস্ত্র সরবরাহ করছিলেন। কিন্তু গত বছর পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম আত্মগোপনে যান। তিনি কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় ‘রহিম্ম্যা ডাকাত’ নামে পরিচিত।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button