ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : জো বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। অধিকাংশ দর্শক এই মত দিয়েছেন বলে সিএনএনের তাৎক্ষণিক জরিপে উঠে এসেছে।আগামী নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন লড়বেন ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে। আর রিপাবলিকান পার্টির হয়ে লড়বেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল সাতটায়) সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে বিতর্কে অংশ নেন বাইডেন ও ট্রাম্প। নির্বাচনের আগে তাঁরা প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিলেন।
সিএনএনের তাৎক্ষণিক জরিপ অনুযায়ী, বিতর্ক দেখেছেন—এমন নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প ভালো করেছেন। আর মাত্র ৩৩ শতাংশ বাইডেনের পক্ষে মত দিয়েছেন।বিতর্ক শুরুর আগে একই ভোটারদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ বলেছিলেন, বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্প ভালো করবেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন। আর বাইডেনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন ৪৫ শতাংশ ভোটার।
তবে সিএনএন বলছে, জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশটির সব ভোটারদের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করেন না। যাঁরা বিতর্কটি দেখেছেন, আর এই জরিপে অংশ নিয়েছেন, শুধু তাঁদের মতামতই এই ফলাফলে প্রতিফলিত হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের মধ্যে রিপাবলিকপন্থীদের সংখ্যা কিছুটা বেশি থাকতে পারে।বিতর্কটি যাঁরা দেখেছেন, জরিপে অংশ নেওয়া এমন ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতার প্রশ্নে বাইডেনের ওপর তাঁদের আস্থা নেই।বিতর্কে বাইডেন ভালো করতে পারেননি বলে তাঁর নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেই আালোচনা চলছে। এ নিয়ে দলটির অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
নতুন মুখের সন্ধান হচ্ছে-
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আছে ছয় মাসেরও কম সময়। এই নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রথম সরাসরি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর পর থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।এই বিতর্কের জের ধরে বাইডেন যদি প্রার্থিতা থেকে সরেও দাঁড়ান, তাহলে তাঁর জায়গায় নতুন একজনকে নির্ধারণ করার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ও জটিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই ইতিমধ্যে দু্ই দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই বাইডেন প্রায় তাঁর সব প্রতিপক্ষকে হারিয়েছেন। তবে এরপরও বাইডেনকে যদি সরে দাঁড়াতে হয় তাহলে ডেমোক্র্যাটরা আরেকটি বড় সমস্যায় পড়বে। তা হলো, বাইডেনের জায়গায় কে আসবেন।বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আমেরিকার জনগণের মধ্যে ততটা জনপ্রিয় হবেন না। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অন্য কোনো নেতাকেও দেখা যাচ্ছে না, যিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে পারেন।
তবে তাতে এই আলোচনা শেষ হচ্ছে না। বরং নতুন নতুন প্রস্তাব আলোচনাকে জোরদার করছে। বাম ঘরানার রাজনৈতিক কলাম লেখক নিকোলাস ক্রিস্টফ এরই মধ্যে বাইডেনের বিকল্প হিসেবে কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করেছেন।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ক্রিস্টফ লিখেছেন, তিনি আশা করেন, বিতর্কে যা ঘটেছে, তা মেনে নেবেন বাইডেন ও তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড় থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবেন। (ডেমোক্রেটিক পার্টির আসন্ন) সম্মেলনে নতুন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ দেবেন।
এখানেই থামেননি কলাম লেখক ক্রিস্টফ। বাইডেনের পরিবর্তে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে কোন কোন রাজনীতিবিদ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন, তাঁদের কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর মতে মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হোয়াইটমার, ওহিওর সিনেটর শেরোড ব্রাউন বা বাণিজ্যমন্ত্রী গিনা রাইমোন্ডো বাইডেনের জায়গা নিতে পারেন।
বিতর্কে ট্রাম্পের জোরালো বক্তব্যের বিপরীতে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন জো বাইডেন। এ নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অসন্তোষ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নতুন করে বাইডেনের বয়স ও তাঁর কর্মতৎপরতার ওপর নজর এসেছে।