সড়ক যোগাযোগ

ব্যাটারি রিকসার অবরোধ-নৈরাজ্য

 

 

 

লাবণ্য চৌধুরী : এবার সড়ক অবরোধ করল ব্যাটারি চালিত অটো রিকসা চালকরা। হাসিনা সরকারের আমলে অটো চালকরা একবার অবরোধ করলে সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এবার হাইকোর্ট বেকে বসে। হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল তিন দিনের মধ্যে বন্ধ বা বিধিনিষেধ আরোপ করতে নির্দেশ দেন। ঘটনাচক্রে ওই দিন রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় আফসানা করিম নামের এক ছাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আগে রাত টার পর অটো চালকরা রাজধানীর মূল সড়কগুলিতে প্রবেশ করত। তবে শহরের অলিগলিতে এগুলো সব সময় চলছে। এই অটো চালকদের অনেকের ট্রাফিক সিগন্যাল সম্পর্কে তেমন ধারণা না থাকলেও এরা আন্দাজের ভিত্তিতে মূল সড়কে চলাচল করছিল। বর্তমানে এরা দিন রাতে সমানতালে নেমে পড়েছে রাজধানীর মূল সড়কগুলিতে। ফলে যানজট-দূর্ঘটনা লেগেই থাকছে। এখানেই সমস্যা অটো চালকদের নিয়ে।

যাহোক বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ছয় ঘণ্টা অবরোধের পর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকেরা মহাখালী রেললাইন ও পাশের সড়ক থেকে সরে গেছেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদ ও সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলতে দেওয়ার দাবিতে কয়েক শ চালক বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বেলা সোয়া ৩টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৬ ঘণ্টা ধরে মহাখালী রেলক্রসিং অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বুঝিয়ে বেলা সোয়া ৩টার দিকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সরিয়ে দিয়েছে। ওদিকে অবরোধের কারণে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে কোনো ট্রেন ঢাকার বাইরে ছেড়ে যায়নি এবং ঢাকার বাইরে থেকে কোনো ট্রেন ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছায়নি বলে জানান, ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা অবরোধ শুরু করেন। তাঁরা মহাখালী, আগারগাঁও, বছিলা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধের এক পর্যায়ে দুপুরের দিকে মহাখালীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় চালকেরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল ছোড়েন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

মহাখালী রেললাইনের পাশপাশিসংলগ্ন সড়ক অবরোধ করায় ঢাকার বাইরে ছেড়ে যাওয়া এবং বাইরে থেকে ঢাকায় আসা দূরপাল্পার বাসগুলো দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। এই অবরোধের প্রভাবে রাজধানীর গুলশান, খিলগাঁও, বাড্ডা ও মেরাদিয়া যেতে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা মহাখালী থেকে সরে যাওয়ায় বেলা সোয়া ৩টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে বেলা ২টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা বিক্ষোভ করেন। সকাল নয়টা থেকে আগারগাঁও ক্রসিংয়ে চলতে থাকা অবরোধ বেলা একটা পর্যন্ত চলে। এই অবরোধের কারণে আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও দুপুর ১২টার দিকে গাবতলীতে বিক্ষোভ করেন ব্যাটারিচালিত রিকাশাচালকেরা। দুপুরে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাকছুদের রহমান দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ব্যাটারি অটো রিকসা চালকেরা সকালে মিরপুর ১০ নম্বরে জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে ৫–৭ মিনিট অবস্থানের পর মিরপুর ১০ নম্বর ও ১ নম্বরে খণ্ড খণ্ড মিছিল করেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button