৯০ হাজার পুলিশ ছিল পলিটিক্যাল
পুলিশ সক্রিয় আছে, যাতে আর চাঁদাবাজির ঘটনা না ঘটে।তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার সদস্যকে রাজনৈতিক পরিচয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন তো এদের বলতে পারিনা-গো হোম!
বিশেষ প্রতিনিধি : নগরবাসীর উদ্দেশে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, “আপনারা কেউ চাঁদা দেবেন না, যারা চাঁদা নিতে আসে তারা কী করে আমি দেখতে চাই। পুলিশ সক্রিয় আছে, যাতে আর চাঁদাবাজির ঘটনা না ঘটে।তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে ৮০ থেকে ৯০ হাজার সদস্যকে রাজনৈতিক পরিচয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন তো এদের বলতে পারিনা-গো হোম! সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের আগে নানাভাবে তাদের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। নিয়োগ পার্থী কোন দলের, তার বাবা কোন দলের, দাদা কোন দলের এবং আরও পূর্বপুরুষ কোন দলের তা খবর নেওয়া হয়েছে। দুই লাখ পুলিশের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ হাজার পুলিশ সদস্য এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তবে যারা দুষ্টু, যারা পেশাদারত্বের বাইরে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যদি সমাজ থেকে প্রতিবাদ গড়ে তোলা না হয়। আপনারা চাঁদা দেবেন না। যারা চাঁদা নিতে আসে তারা কীভাবে চাঁদা নেয় সেটা আমরা দেখব। চাঁদাবাজির জন্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি কাজ করছি দ্রুতই আপনারা দেখতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। বিষয়টি খোদ পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, “আমার লোক হোক আর মামলার বাদী, যদি তথাকথিত ব্যক্তিদের আসামি করে চাঁদাবাজি করেন, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হবে না জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে অধিকাংশ মামলা হয়েছে কোর্টের নির্দেশে। এখানে আসামি সংখ্যা ছিল ২০০ প্লাস। এর মধ্যে হয়তো দেখা যাচ্ছে, এসব মামলায় অনেকে জড়িত ছিল না, গুটি কয়েক লোক জড়িত ছিল। কিন্তু এখন যেটা ঘটেছে ওই মামলার বাদী একশ লোকের কাছে গিয়ে টাকা চাচ্ছে। এসব আসামির ভয়ের কিছু নেই। আমি তাদের এরেস্ট করব না। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা আসবে আমরা শুধু তাদের গ্রেপ্তার করব। বাদী উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই দুইশ লোককে আসামি করেছে। পরবর্তীতে তিনি চাঁদাবাজি বাণিজ্যটা করবেন বলে।
এই মামলার বাদী ছাড়াও পুলিশও এমন কাজ করছে জানিয়ে কমিশনার বলেন, “আবার আমার লোক যে সব ভালো তা বলব না। আমার কাছে যাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট এসেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি গতকাল অলরেডি একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি যিনি আমার লোক, এই কাজে লিপ্ত ছিল।”
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা। তবে ট্রাফিকে শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।এজন্য স্কুল-কলেজের পাশে অভিভাবকদের বাসা ভাড়া নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন শেখ মো. সাজ্জাত আলী। পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার কমানোর অনুরোধও জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, “বিগত সরকার অটোরিকশার অনুমতি দেওয়ার কারণেই বাড়ছে অটোর সংখ্যা। অচিরেই এটি কমানো না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে নগরবাসীকে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।”