বাজুস সভাপতি আনভীরের কারণে বদলে গেছে জুয়েলার্স শিল্প ব্যবসা
নারায়ণগঞ্জে বাজুসের ২২০ জন নতুন সদস্যকে বরণ
স্টাফ রিপোর্টার : বাজুস সভাপতি আনভীরের কারণে বদলে গেছে জুয়েলার্স শিল্প ব্যবসা। নারায়ণগঞ্জে গত ২৬ বছরে যা হয়নি তা মাত্র ৬ মাসে সম্ভব হয়েছে আমাদের বাংলাদেশ জুয়েলারি এসোসিয়েশনের (বাজুস) সভাপতি ও দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের জন্য। নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন এর নতুন সদস্যদের বরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অতিথিরা বলেন, তার ব্যবসায় পরিচালনার বিশেষ দক্ষতা ও দূরদৃষ্টি আমাদেরকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।সোমবার (২৩ মে) বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত গ্রান্ড হল রেস্টুরেন্টে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বাজুসের নারায়ণগঞ্জের ২২০ জন নতুন সদস্যকে বরণ করে নেয়া হয়। তাদের সবাইকে সদস্য পত্র, বাজুস সার্টিফিকেট, ফুল, আইডি কার্ড তুলে দেন অতিথিরা।
প্রধান অতিথি এম এ ওয়াদুদ খান বলেন, আমরা এসেছি আমাদের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর সাহেবের পক্ষ থেকে আপনাদের বরণ করতে। আমার বাড়ি বরিশাল, আগে নারায়ণগঞ্জ হয়েই যেতে হত। সেই আগের নারায়ণগঞ্জের স্মৃতি এবং আপনাদের ঐক্যে আমি অভিভূত হয়েছি। নারায়ণগঞ্জে ভাল জুয়েলারি অলংকার বিক্রি হয়। এখানে যারা খারাপ মাল বিক্রি করে তারা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জুয়েলারির মান উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। আমরা এমন এক ব্যবসায় আছি যা এ দেশের সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে আছে।
আপনারা স্বর্ণ মেমোর মাধ্যমে নিবেন এবং এনআইডি রাখবেন। তারপরেও পুলিশ হয়রানি করতে আসলে আমরা দেখব। আপনারা সৎ ভাবে ব্যবসায় করেন সায়েম সোবহান আনভীর সাহেব আপনাদের পাশে আছে। যে দোকানে বাজুসের লোগো নেই সেখান থেকে কেউ জুয়েলারি কিনলে প্রতারিত হতে পারেন।
শুধু ৪০ হাজার নয়, সারা বাংলাদেশে আমাদের ৭০ থেকে ৮০ হাজার সদস্য হবে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বাইরেও অনেকগুলো দোকান আছে। তাহলে কেন সদস্য হবে না। শুধু নারায়ণগঞ্জ থেকেই দুই হাজার সদস্য হবে। আমাদের এত সদস্য যদি হয় আমরা বাজুসের নেতৃত্বে সায়েম সোবহান আনভীর আমাদের পাশে আছেন তাহলে ভয় কোথায়। আমরা সবাই সরকারকে ট্যাক্স দেব এবং ব্যবসা করবো। আসুন আমরা বাজুসের নীতিকে অনুসরণ করি এবং সবাই সমান রেটে বিক্রি করি। আমাদের কোন সমস্যা থাকবে না। বাংলাদেশেই বছর খানেকের মধ্যে স্বর্ণ তৈরি হবে। আমাদের এ ব্যবসায় সুদিন আসবে।
আমাদের স্বর্ণের রিজার্ভ কম। একমাত্র আমরা যারা জুয়েলার্স এখানে দশ ভরি করে হলেও কত স্বর্ণ রয়েছে। আমরা ভাল একটা রিজার্ভ গড়ে তুলতে পেরেছি তাই আমরা সুযোগ সুবিধা দাবী করতে পারি।
বিশেষ অতিথি সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান ডাঃ দিলীপ কুমার রায় বলেছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে যারা বাজুসের চেয়ে কম দামে বিক্রি করে। কম দামে খারাপ মানের পন্য পাওয়া যায় ৷ আমরা মান ধরে রাখতে চাই। সায়েম সোবহান আনভীর ঐক্যের প্রতীক। সে কোন বিভাজন চায় না। আমি বলতে চাই এখানে নির্বাচিত কমিটি হতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন করে যাব তারা নির্বাচনের সময় দেবেন। আপনারা সবাই মিলে একটা প্যানেল দিন৷ আপনারা বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন আর দ্বিমত থাকলে নির্বাচন করুন। আমি বাজুসের সভাপতির সাথে আসার সময় আলোচনা করে নিয়েছি আমরা নিরপেক্ষ ও সুন্দরভাবে একটি নির্বাচন পরিচালনা করতে চাই।
তিনি বলেন, এইচ এম আসলাম সানি নির্বাচন কমিশনার হবেন এবং প্রবীর সাহা আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান হবেন। আপনারা নাম দিবেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে ভোটের কাজগুলো বর্তমান কমিটির সহযোগিতা নিয়ে একটি সুন্দর কমিটি হবে। বর্তমান কমিটি আগামী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত থেকেই সুন্দর ও নতুন কমিটি উপহার দেবেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অতিথি ও ব্যবসায়ীরা বলেন, নারায়ণগঞ্জে ৪ হাজারের বেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ী আছেন বলে জানিয়েছিলেন আমাদের সভাপতি আনভীর। আমরা এতদিন ব্যবসা করেও তা বুঝতে পারিনি। তবে যখন আমরা মাঠে নামলাম, দেখলাম তার ধারণাই সঠিক। তার এই দূরদৃষ্টি আমাদেরকে উৎসাহিত করে। আগামীতে বাজুসের নিবন্ধন ছাড়া কেউ বৈধভাবে স্বর্ণ ব্যবসা করতে পারবেন না। আমরা সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে জুয়েলারি শিল্পের ইতিহাস বদলে দিতে চাই। আমাদের নতুন নেতৃত্ব দেশের আইকন সায়েম সোবহান আনভীর জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জন্য ‘গোল্ড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। তরল সোনা রিফাইন করে বিদেশে রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন। আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো।
বক্তারা বলেন, আমাদের সভাপতির মূল লক্ষ্য সৎভাবে ব্যবসা করা। যেন কোন গ্রাহক আমাদের থেকে প্রতারিত না হয়। গ্রাহক সন্তোষ্টির মাধ্যমে আমরা আরো অনেকদূর এগিয়ে যাব। তার ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা, সৃষ্টিশীলতা ও দূরদর্শিতায় আগামীতে বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে। অদূর ভবিষ্যতে স্বর্ণের বারে লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। বাংলাদেশই ‘গোল্ড ব্যাংক’ হবে।
অনুষ্ঠানের তারা বলেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের সুখে দুঃখে পাশে আছি। আপনারা সাহস করুন ব্যবসায় চালিয়ে যান। আমরা জুয়েলার্সের ব্যবসা করি আমাদের ভাবতে হবে এটা কিভাবে টিকিয়ে রাখবো। আমরা চাচ্ছি ইন্ডাস্ট্রি করতে হবে। আগে আমাদের দোকান ছিল পাশে কারখানা ছিল। এখন তা নেই। এ কারনে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নষ্ট হচ্ছে। আমরা যদি এখানে ইন্ডাস্ট্রি করি তাহলে বেকারত্ব কমবে পাশাপাশি গ্রাহকও বৃদ্ধি পাবে।তারা আরো বলেন, আমরা লেবার তৈরি করতে পারিনি তাই আমাদের কষ্ট বেশি। আমরা যদি লেবার গড়ে তুলতে পারি তাহলে আমাদের কষ্ট কমবে। ইন্ডাস্ট্রি করতে যদি কোন অসুবিধা হয় আমরা আপনাদের সহায়তা করব। আপনাদের সাথে এই যে সম্পর্ক, আমরা নারায়ণগঞ্জে এসেছি আমাদের পরিচিতি হল, বন্ধন হল। আপনারা সকলে চেষ্টা করবেন কোয়ালিটি মাল বিক্রি করতে এবং কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করতে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বাজুস’র সহ-সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান এনামুল হক খান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান গুলজার আহমেদ, সহ-সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য ও সদস্য সচিব মো. রিপনুল হাসান। আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক হানিফ উদ্দিন সেলিম, স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হাসান খান, ফারুক আহমেদ, আমীর হোসেন খান, অভিজিৎ রায়, গোলাম মোহাম্মদ খোকা, লিটন খন্দকার, নজরুল ইসলাম রোমান, আসাদুজ্জামান।অনুষ্ঠান শেষে বাজুসের সভাপতির পক্ষে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটির রুহুল আমিন রাসেল।