ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির চেষ্ঠায় ২ ছাত্রদল নেতা মার খেয়ে হাসপাতালে
ঢাবি প্রতিনিধি : ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে, ছাত্রদের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে এসে ২ ছাত্রদল নেতা মার খেয়ে ড্রেনে পড়ে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগ হামলা করেনি বরং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে ছাত্রদল। ছাত্রদল অছাত্র ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিহত করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ছাত্রলীগও ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। তিনি বলেন, ছাত্রদল কিলিং মিশন নিয়ে ক্যাম্পাসে এসে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছিল। কিন্তু সাধারন ছাত্রদের বাঁধার মুখে তা পারেনি। মঙ্গলবার (২৪ মে) ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সাদ্দাম।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ চায় ছাত্রদের নির্বিঘ্ন শিক্ষা জীবন। তারা নির্বিঘ্নে ক্লাস করবে পরীক্ষা দেবে, হলে থাকবে। শিক্ষাঙ্গন কোনোভাবেই যেন সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল না হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু ছাত্রদল সাংগঠনিকভাবে সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, লাশ ফেলার পাঁয়তারা করছে। এজন্য স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ রয়েছে, তারা রুখে দাঁড়াতে চায়। আজ যখন ছাত্রদলের ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বহিরাগতদের সাথে নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করে তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করে। ছাত্রলীগ তখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানায়। ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনোভাবেই ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা চালায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করেছে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়েছে। ক্যাম্পাসে মিছিল করেছে, স্লোগান দিয়েছে। আর সেটা করতে গিয়ে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীও আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদলকে আমরা আহ্বান জানাই, তারা সন্ত্রাসের ভাষা পরিত্যাগ করুক, রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া বন্ধ করুক। লন্ডনের ফতোয়া যদি তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করতে চায়, কিলিং মিশন বাস্তবায়ন করতে চায়, সেক্ষেত্রে আমরা অতীতের ধারাবাহিকতায় তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
এর আগে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে সকালে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। মঙ্গলবার (২৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের গেটের পাশে ছাত্রদলের দুই নেতাকে মারধর করে ড্রেনে ফেলে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের শহীদুল্লাহ হলের কর্মীরা এতে অংশ নেন বলে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই দুই ছাত্রদল নেতা। তারা হলেন— বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এজিএস ছাত্রদল নেতা আল আমিন বাবলু এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সহ-সভাপতি মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রদলের এই দুই নেতাকে ড্রেনে ফেলে বেধড়ক মারধর করছেন ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। এসময় তাদের বলতে শোনা যায়, এত বড় সাহস ছাত্রদল করিস। পরে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তুহিন রেজা, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের নেতা সৈয়দ শরিফুল আলম শফুর হস্তক্ষেপে ড্রেন থেকে তোলা হয় তাদের। তোলার পর আবারো কয়েক দফা মেরে রিকশায় তুলে দেওয়া হয়। রিকশায় উঠলে আবার লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয় মিনহাজুল আবেদীনকে। মারধরে তার পা ভেঙে যায়। পরে ছাত্রলীগের দুই কর্মী আবার তাকে রিকশায় তুলে দেন। ছাত্রদল নেতা মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, দোয়েল চত্বরে মিছিলসহ আসার পর শহীদুল্লাহ হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাকে টেনে হলের ভেতরে নিয়ে মারতে শুরু করে। লাঠি-হকিস্টিক দিয়ে মারার পাশাপাশি চাপাতি দিয়ে কোপও দেয় তারা। রিকশায় তুলে দিয়ে আবারও লাথি মেরে ফেলে দেয়। আমার পা পুরোপুরি ভেঙে গেছে। একা একা আমাকে মেডিকেলে পাঠানো হয়।