রাজনীতি

উপদেষ্টা মাহফুজকে লক্ষ্য করে বোতলাঘাত জবি শিক্ষার্থীদের

সহমর্মিতা দেখাতে এসে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতলাঘাত করায় তোলপাড় চলছে। একই সময় শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টাকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলেও চিৎকার করতে থাকেন। এরি মধ্যে বাম পাশ থেকে একটি বোতল এসে উপদেষ্টার মাথায় লাগে।

লাবণ্য চৌধুরী : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহমর্মিতা দেখাতে এসে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতলাঘাত করায় তোলপাড় চলছে। একই সময় শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টাকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলেও চিৎকার করতে থাকেন। এরি মধ্যে বাম পাশ থেকে একটি বোতল এসে উপদেষ্টার মাথায় লাগে। তখন মাহফুজ বলেন-‘আমি কথা বলব না’।

সরেজমিনে চিত্রে দেখা যাচ্ছে বাম পাশ থেকে উড়ে আসছে বোতলটি উপদেষ্টার মাথা বরাবর। এরপর সেটি মাথায় আঘাত হানে। এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় তার মাথায় উড়ে এসে একটি প্লাস্টিকের বোতল পড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভিড় থেকে কেউ তাকে লক্ষ্য করে বোতলটি ছুড়ে মেরেছেন।

বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এ ঘটনা ঘটে। তিন দফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকে কাকরাইলে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন জবির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরাও এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে যোগ দেন। রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলছিল।

রাত ১০টার পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বক্তব্য শুরুর এক মিনিটের মাথায় তিনি বলেন, ‘আজকে যেভাবে আন্দোলনে পুলিশের কিছু সদস্য হয়তো—আপনার—উস্কানি…।’ এ কথা শোনামাত্র শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এর পরপরই বাম পাশ থেকে একটি বোতল এসে তার মাথায় লাগে। তখন মাহফুজ বলেন, ‘আমি কথা বলব না।’ এরপর তিনি পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

বক্তব্যের শুরুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মাহফুজ বলেছিলেন, ‘আপনারা ন্যায্য দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এ বিষয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে ডায়ালগের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।’এর আগে সকাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ‘লংমার্চ’ কর্মসূচি শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে রওনা দেন তারা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে লংমার্চ শুরু হয়।

কাকরাইল মসজিদের সামনে পুলিশ বাধা দিলে ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে শুরু হয় লাঠিচার্জ। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো— ১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, ২. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দেওয়া, ৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শহীদুল আলম দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘আমাদের প্রশাসন ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন। তারা ফিরে এসে কী সিদ্ধান্ত দেন, তা জানার অপেক্ষায় আছি।’

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button