জাতীয়

জুলাই বিপ্লবে বিহারীদের সক্রিয় করেছিল নেয়াজ

 

 

স্টাফ রিপোর্টার : ২৪ সালের মধ্য জুলাই হতে রাজপথে রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশে উর্দুভাষী বিহারী মুসলমানগন আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার করতে মাঠে ছিলেন নেয়াজ আহমদ খান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে রাজপথ কাঁপিয়েছিল বিহারীরা।
দিনাজপুর, সৈয়দপুর, রংপুর, ঈশ্বরদী, খুলনা, মোমেনশাহী, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জেলায় উর্দুভাষী মুসলমানগণ ছাত্রদের আন্দোলনে তাদের অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হয়েছে। তারা গ্রেফতার হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, হাত-পা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু রাজপথ ছাড়েননি। অবহেলিত ক্যাম্পবাসী বিহারীগণ রাজধানীর মিরপুর-১০ ও মোহাম্মদপুরের আসাদগেটে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরপুর-১০ এলাকায় বিহারীদের ব্যাপক সরকার বিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হুমকি দিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই বক্তব্য নেট জুনিয় ভাইরাল হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও যাত্রাবাড়ীর পরেই মিরপুর-১০ গোল চত্বর এলাকায় ফ্যাসিস্ট লীগ ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে তাড়া করেছিল বিহারীগন। সরকারের বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক ছাত্র তরুণদের নির্মমভাবে হত্যায় বিচলিত হয়ে উর্দুভাষীরা রুখে দাড়ায়।

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরের ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই বিহারী জনগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ করেন। জুলাই আন্দোলনে সেই সৈয়দপুরে তিনজন পুলিশ নিহত হয়েছে। সৈয়দপুর শহর শান্তিপূর্ণ শহর হিসেবেই বিবেচিত। সেখানে পুলিশ নিহত হওয়ার ঘটনায় পুরো উত্তরাঞ্চলে ফ্যাসিস্ট লীগ সরকার পায়ের নিচে মাটি হারিয়ে ফেলে।

নেয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশী বিহারী পুনর্বাসন সংসদ (বি বি আর এ) ব্যতিরেকে সকল বিহারী সংগঠনই আওয়ামী লীগের দালালি করেছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের কথিত বিহারী নেতা শওকত মাস্টার, হারুন, মোস্তাক, ফাক্কু, বাবলু, লীগ শাসনামলে প্রকাশ্যে দালালি করেছে। এরা মিরপুর, মোহাম্মদপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এদের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্র হত্যার মামলা থাকা সত্ত্বেও পুলিশের দালালি করার কারণে কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিহারীরা।

মিরপুরের সেনপাড়াস্থ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে লীগ কর্মীদের মাঝে অস্ত্র বিতরণের সংবাদ পেয়ে ৩ আগস্ট রাতেই জুট পটি্ ও বেনারসি শাড়ি মার্কেট এলাকায় থমথমে পরিবেশে প্রতিবাদী অনুসারীদের নিয়ে মিছিল করেন ন্যাপ বাংলাদেশের মহাসচিব ও বিবিআরএ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক নেয়াজ আহমদ খান। পুলিশ তাকে তার বাসা হতে ৩ আগস্ট রাতেই গ্রেফতার করে। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশে নেয়াজ আহমদ খান ৭ই আগস্ট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হতে মুক্তি পান।

এই প্রতিবেদক কে নেয়াজ আহমাদ খান দুঃখ করে বলেছেন যে, সরকার বিহারীদের অবদানকে মূল্যায়ন করছে না। বিহারীদের পুনর্বাসনের জন্য গত ১৮.১০.২০২৪ তারিখে শাহাবাগ মিছিল ও সমাবেশ করে সরকারের নিকট দাবি জানালেও অদ্যাবধি প্রফেসর ইউনূসের সরকার বিহারীদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে কোন মুখ খুলেনি। সরকারের আচরনে ক্যাম্পবাসিগন ব্যথিত ও হতাশ।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে বিহারীদের অংশগ্রহণকে গণভবনের জাদুঘরে স্থান দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন সৈয়দপুরের উর্দুভাষী বাসিন্দা সাহিদ হোসেন চিশতী ও রাজধানীর জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা আনোয়ার রেজা।
বিহারী পুনর্বাসন সমস্যা গত ৫৪ বছর যাবত উপেক্ষিত থাকায় এই সরকারের আমলে মহামান্য হাইকোর্ট হতে বিহারীদের কেন পুনর্বাসন করা হবে না এই মর্মে ২টি রুল ইস্যু হলেও সরকারের নীরবতা বেদনাদায়ক বলে মন্তব্য করেছেন বিহারী নেতা কাওসার পারভেজ ভূলু।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button