পর্যটন

১১ পর্যটকের করুন মৃত্যু

কোচিংয়ের চার বন্ধু এখন শুধুই স্মৃতি

 

 

 

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ১১ পর্যটকের করুন মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। ট্রেনের ধাক্কায় পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের নিহত ১১ যাত্রীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার পর মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।তিনি জানিয়েছেন, পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে উপজেলার খৈয়াছড়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। আহতরা সবাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হতাহতরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী এবং তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারে।

এ ঘটনায় ওই লেভেলক্রসিংয়ের গেটম্যান সাদ্দামকে বিকেল ৬টার দিকে আটক করে রেলওয়ে পুলিশ। দুর্ঘটনার কারণ জানতে চট্টগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মো. আনছার আলীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী-১ আব্দুল হামিদ, বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হাসান, রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কমানডেন্ট রেজানুর রহমান ও রেলওয়ের বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, একটি মাইক্রোবাসে ১৮ জন তরুণ-যুবক খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফিরছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। হতাহতরা সবাই ‘আরএনজে কোচিং সেন্টার’ নামে একটি কোচিং সেন্টারের ছাত্র-শিক্ষক। প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, ট্রেন আসার সিগন্যাল পেয়ে ওই ক্রসিংয়ের গেটম্যান সাদ্দাম বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড দিয়েছিলেন। সেই বাঁশ ঠেলে মাইক্রোবাসটি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। এমনকি গেটম্যান লাল পতাকা উড়িয়ে মাইক্রোবাসচালককে থামার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান সাদ্দাম ওই লেভেলক্রসিংয়ে ছিলেন না। তিনি জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। বাঁশ ফেলে ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়নি।এদিকে কমিটি গঠনের পরই ঘটনার মূল সত্যতা খুঁজে বের করতে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিটি প্রধান মো. আনছার আলী।

কোচিংয়ের চার বন্ধু এখন শুধুই স্মৃতি

মাত্র দেড় মাস আগে ৪ বন্ধু মিলে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কোচিং সেন্টারটি। বন্ধুদের নামের অদ্যাক্ষর দিয়ে গত ১৫ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আমানবাজার জোগিরহাট এলাকায় চালু করেন আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টার। এই চার শিক্ষক হলেন-রাকিব খান, তৌহিদুল আলম জিসান, জিয়াউল হক সজিব এবং রেদুয়ান চৌধুরী।আজ শুক্রবার সকালে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় পিকনিকে যাওয়ার ঠিক আগে কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোচিংয়ের সামনে একটি ছবিও তুলেছিলেন তারা।

ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন রাকিব খান। কে জানত নিজেদের কোচিং সেন্টারের সামনেই এটিই তাদের শেষ ছবি।ছবি পোস্ট করার মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় রাকিব ও তার অপর তিন বন্ধু নিহত হন।একই দুর্ঘটনায় কোচিং সেন্টারের ৬ শিক্ষার্থী ও মাইক্রোবাস চালকও নিহত হন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button