ঝাড়ুর লাঠিতে বেঁধে জাতীয় পতাকা সিলেটের হাবিব ব্যাংকে উত্তোলন
স্টাফ রিপোর্টার : ঝাড়ুর লাঠিতে বেঁধে জাতীয় পতাকা উত্তেলন করা হয়েছিল সিলেটের হাবিব ব্যাংকে। এনিয়ে তোলপাড় পড়ে গেলে দুপুরের পর তা সরিয়ে নেয়া হয়। জানা গেছে, জাতীয় শোক দিবসে যথাযোগ্য মর্যাদায় অর্ধনমিত করে পতাকা উত্তোলনের কথা। এ নিয়ে আগস্ট মাসের শুরু থেকে সরকারিভাবে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও সিলেটে পাকিস্তানের মালিকানাধীন হাবিব ব্যাংকের (এইচবিএল) সিলেট শাখায় ঝাড়ুর লাঠিতে বেঁধে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছিল।
সোমবার জাতীয় শোক দিবসের দিন সকালে ব্যাংকটির এমন কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিলেটের সচেতন মহলসহ সাধারণ মানুষ। এ বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
দুপুরে নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারস্থ হাবিব ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকটির সামনে ঝাঁড়ুর লাঠির মধ্যে একটি জাতীয় পতাকা বেঁধে রাখা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পতাকাটি উত্তোলন করা হয়েছে।
ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রহরী কমলেশ দের ভাষ্য, ব্যাংকের অপর নিরাপত্তা কর্মী আফজল মিয়া এভাবে পতাকাটি বেঁধেছেন। আফজল মিয়া ভাষ্য, বাঁশ না পেয়ে তিনি না বুঝে ঝাড়ুর লাঠির মধ্যে পতাকাটি টানিয়েছেন। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কমলেশ দে পতাকাটি ঝাড়ু থেকে খুলে নেন।হাবিব ব্যাংক সিলেট শাখার ক্যাশ ইনচার্জ বিদ্যুৎ কুমার দে বলেন, এটা মারাত্মক ভুল হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীরা না বুঝে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে। এজন্য আমি নিজেও দুঃখিত। নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাতীয় পতাকা অবমাননার বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।এদিকে বিষয়টি জানার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা ও প্রশাসনের লোকজন। গোয়েন্দা সংস্থার একদল সদস্য হাবিব ব্যাংকের সিলেট শাখা পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এর পরপরই সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশের একট টিমও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।পরে সেখানে আসে জেলা প্রশাসনের একটি টিম। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিসবাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে আসা টিমটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পতাকা উত্তোলকারী নিরাপত্তকর্মী ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়ে চলে যান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেসবাহ উদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং পতাকা উত্তোলকারী নিরাপত্তকর্মী ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছি।এদিকে বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সমালোচনার মধ্যে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা উত্তোলনকৃত জাতীয় পতাকা সরিয়ে সঠিকভাবে নতুন করে পতাকা উত্তোলন করেছেন।