সততার বিরল দৃষ্টান্ত দেখালেন এমদাদুল হক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : সাবাস এমদাদুল হক! একেই বলে সততা নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম। এমদাদুল টাকাটা পরিশোধ না করলেও পারতেন। কিন্তু পরকালের ভয় দেশপ্রেম তাকে তাড়িয়ে বেরিয়েছিল। ফলে তিনি আর দেরি করেননি। সারা জীবনে যতবার বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করেছিলেন সেই সব দেনা একবারে পরিশোধ করলেন ষাটোর্ধ্ব এমদাদুল হক। এ ধরনের দেশপ্রেম ও সততার নজির সবাই দেখালে দেশে কোনো অভাব যেমন থাকে না তেমনি কাউকে অনৈতিকতায় ভুগতে হতো না বলে অনেকেই মনে করেন।এ সম্পর্কে এমদাদুল হক বলেন, আমার কোনো পুণ্যেই এই দেনার কারণে (বিনা টিকিটে ভ্রমণ) শোধ হবে না। তাই টিকিটের টাকা পরিশোধ করেছি। এটা করে মানসিকভাবে শান্তি পাচ্ছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সততার এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন ষাটোর্ধ্ব এমদাদুল হক। জীবনে যতবার বিনা টিকিটে ট্রেনে চড়েছেন- সেই হিসাব করে টিকিটের মূল্য পরিশোধ করেছেন তিনি। গতকাল সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) স্বেচ্ছায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে টিকিট মূল্য ২,৫৩০ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। এমদাদুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইল এলাকার বাসিন্দা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার নবীনগর উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে এমদাদুল হক কনস্টেবল পদে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চাকরি করতেন। গতবছর তিনি অবসরে যান। চাকরিরত অবস্থায় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় যাতায়াত করেছেন। তবে কখনও কখনও টিকিট না কেটেই ট্রেনে চড়েছেন। তবে এমন কতবার বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন- সেই হিসেবও করে রেখেছিলেন এমদাদুল হক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন জানান, এমদাদুল হক টিকিট কাউন্টারে এসে বলেন- তিনি বিভিন্ন সময় টিকিট ছাড়াই ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন এবং তার কাছে হিসাবও আছে। হিসাব মতে তিনি ২ হাজার ৫৩০ টাকা টিকিট বা ভাড়া বাবদ রেলকে দিতে চাচ্ছেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ২ হাজার ৫৩০ টাকা সমমূল্যের আসনবিহীন কয়েকটি টিকিট ইস্যু করে দেওয়া হয় এমদাদুল হককে।