নড়াইলে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে হাতাহাতি
নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের সময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুর প্রস্তাবক ও সমর্থকসহ ৪ জনকে মারধরের অভিযোগ এবং দুই সদস্য প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ৬জন আহত হয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সুবাস চন্দ্র বোসসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের সামনে এই ঘটনা ঘটে।জানা গেছে, সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের কাজ চলছিল।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাধারণ-২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী খোকন সাহা ও অপর প্রার্থী ওবায়দুর রহমান দুইজনই তালা প্রতীক দাবি করাকে কেন্দ্র করে কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এর কয়েক মিনিট পর জেলা প্রশাসকের হলরুমের পূর্বপাশে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুর প্রস্তাবকারী নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম ও সমর্থনকারী একই ইউনিয়নের অপর সদস্য সৈয়দ নওয়াব আলী বসে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে কয়েকজন এসে তাদের বেধড়ক মারপিট শুরু করে। এ সময় জেলা প্রশাসকের হলরুমের চেয়ার ভাঙচুর করে। তখন কিছু সময় প্রতীক বরাদ্দের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সৈয়দ নওয়াব আলী অভিযোগ করে বলেন, নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটুর পক্ষে প্রতীক নেওয়ার জন্য আসি। জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার সময়ে কিছু সন্ত্রাসী আমার ও আমাদের লোকের ওপর হামলা করে। আমাদের তুলে নিতে চাই। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সুবাস চন্দ্র বোস ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ও অপর প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু প্রতীক হিসেবে আনারস দাবি করি। তখন আমার লোকদের সঙ্গে লিটুর সমর্থকদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু এ ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রতীক আনতে যাওয়া আমার প্রস্তাবকারী মো. শরিফুল ইসলাম ও সমর্থনকারী সৈয়দ নওয়াব আলীসহ ৪জনকে মারপিট করা হয়েছে।’ নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে নিতে এ ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করে এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন তিনি।সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে সামান্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. জসিম উদ্দিন হামলা ও মারামারির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নির্দেশে প্রায় আধা ঘণ্টা প্রতীক বরাদ্দের কাজ বন্ধ থাকলেও পরে আবার শুরু করা হয়।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা ফুটেজ দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এছাড়া দু’সদস্য প্রার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ১৭ অক্টোরব নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনজন চেয়ারম্যান পদে, সাধারণ পদে ১০জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন-সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস, সাবেক লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু ও সুলতান মাহমুদ বিপ্লব। চারটি কেন্দ্রে মোট ৫৫২জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।