খারিজ মামলায় দুর্নীতির নয়া পদক্ষেপ! প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ
বিশেষ প্রতিনিধি : দুদকের অনুসন্ধানে ঘাট ইজারায় প্রায় ৭ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে যে তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে তা নিয়ে নানা রহস্য সৃষ্ঠি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নগরবাড়ির দুইটি ঘাটের ইজারা নিয়ে অভিযোগ হয়েছিল। পরে এটি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হলে ফুল কোর্ট বিচারে হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়। সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ফের বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন জড়িত রয়েছে বলে মামলার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে যে তথ্য দুদক সরবরাহ করেছে তা নিয়ে নানা সন্দেহ ও প্রশ্নের সৃষ্ঠি হয়েছে।
অভিজ্ঞ মহল বলছেন, যেখানে বিআইডব্লিউটিএ’তে সরকারের সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হচ্ছে সেটা বাঁধাগ্রস্থ করতে এটা করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। আর এজন্যই বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানসহ ১৩ জন জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। যাতে উন্নয়ন কাজগুলো বাঁধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
দুদক জানায়, তাদের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের দুর্নীতির তথ্য। এরা দুর্নীতি করেছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। ঘটনা ঘটেছে নগরবাড়ির দুইটি ঘাটের ইজারা নিয়ে। এ দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার সকালে কমিশনের বৈঠকে মামলাটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক আলিয়াজ হোসেন বলেন, যে কোনো সময় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হবে।
মামলায় গোলাম সাদেক ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য দেলোয়ার হোসেন, দুই পরিচালক আবু জাফর হাওলাদার ও ওয়াকিল নওয়াজ, অতিরিক্ত পরিচালক সাইফুল, যুগ্ম পরিচালক জুলফা খানম, উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানসহ সাবেক তিন উপপরিচালক সেলিম রেজা, কবির হোসেন, মাসুদ পারভেজ।এছাড়া তিন ইজাদারকেও মামলায় আসামি করা হবে। তারা হলেন, এজাজ আহমেদ সোহাগ, সাইফ আহমেদ ইমন এবং রফিকুল ইসলাম খান।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরিচার নগরবাড়ি, কাজিরহাট, নরাদহ নদী বন্দরে ইজারা দেওয়ার সময় কোনো নিয়ম নীতি মানা হয়নি। এভাবে ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ এ দুই অর্থবছরে দুর্নীতির মাধ্যমে ইজারা দিয়ে ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকার। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এতে পরস্পর যোগসাজশে লাভবান হয়েছে আসামিরা।
ঘটনা সম্পর্কে ‘বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান বলেন, এখানে দুর্নীতির কোনো স্থান নেই এবং দুর্নীতি করারও কোনো সুযোগ নেই। দুদক যে দুর্নীতির কথা বলছে সেটা নগরবাড়ির দুইটি ঘাটের ইজারা নিয়ে অভিযোগ হয়েছিল। পরে এটি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হলে ফুল কোর্ট বিচারে হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়।
তারপরও দুদক ওই বিষয়টি নিয়েই যখন মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা বলছে তখন বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ সংস্থা হিসেবে এর মোকাবেলা করবে’ বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক। তিনি দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেছেন, একটা সংস্থার সব অফিসার দুর্নীতি’র সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে কি! তিনি বলেন, আমাদের সাড়ে চারশ ঘাট পয়েন্ট রয়েছে। অনেক
গুলো ঘাট ইজারা হয়েছে। অনেকগুলো এখনো হয়নি। এটি চলমান প্রক্রিয়া। তাঁর মতে, কোথাও কোনো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্ঠি হচ্ছে কিনা সেটাও বড় বিষয়। যাহোক আমরা শিগগির দুদক সচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। দুদকের যে কর্মকর্তা এটি দেখছিলেন তিনি আমাদের কাছে এলে আমরা তাঁকে সব ধরনের সহযোগীতা করেছি।তারপরও তিনি কেন মামলার পদক্ষেপের বিষয়ে বলছেন সেটি আমরা প্রতি মন্ত্রী মহোদয় কেও জানিয়েছি। যে দুর্নীতির বিষয়টা হাইকোর্ট থেকে খারিজ হয়েছে সেখানে আবার সেটার পুনরাবৃত্তিই বা কেন করা হচ্ছে সেটাই বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন বলেও জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক।