অর্থনীতি অর্থমন্ত্রী চালান না চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী-মান্নান
বিশেষ প্রতিনিধি : সিপিডির সংলাপে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এম মান্নান বলেন, অর্থনীতি অর্থমন্ত্রী চালান না, অর্থনীতি পরিকল্পনামন্ত্রী বা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর চালান না। অর্থনীতি বাই রুল বাই অর্ডার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এটাই আইন। কারণ তিনি সরকারপ্রধান। অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি চালান না, পরিকল্পনামন্ত্রী বা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও না। বাই রুল বাই অর্ডার অর্থনীতি চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে সংকটে দৃশ্যমানভাবে পাওয়া যায় না- শনিবার এক সংলাপে এমন বক্তব্যের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা বলেন।‘সংকটে অর্থনীতি: কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে?’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান।এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
আরও উপস্থিত ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এবং বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের এমডি রূপালী হক চৌধুরী।সংলাপে অর্থমন্ত্রীর নিষ্ক্রিয়তার উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলা হয়। বলা হয়, দেশের অর্থনীতি চালাচ্ছেন কে? পরিকল্পনামন্ত্রী বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, ‘অর্থনীতি অর্থমন্ত্রী চালান না, অর্থনীতি পরিকল্পনামন্ত্রী বা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর চালান না। অর্থনীতি বাই রুল বাই অর্ডার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এটাই আইন। কারণ তিনি সরকারপ্রধান। আমি বা অন্য কেউ একজন আজ অসুস্থ হলেন, আমি হয়তো অফিসে গেলাম না। তাই বলে কাজ তো আর পড়ে থাকবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে। আগে যেভাবে চালের হিসাব করতে দেখেছি এখন তা নেই। যে গ্রামে আমি সাঁতরে স্কুলে গেছি, সেখানে এখন বাচ্চারা মোটরসাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। আপনারা কালো মেঘ দেখছেন, আমরা সিলভার লাইটিং দেখছি।এমএ মান্নান বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমছে, তবে নিম্ন হারে। ফলে মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে। বিবিএস সঠিক নয় এটা কেউ বললে তার সঙ্গে আমি বিবাদে যাব। আমরা সংখ্যা নিয়ে অসত্য কথা বলি না। আমাদের ফিগার বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফও স্বীকার করেছে।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী আমাদের বলেছেন যে দেশে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি হয়তো জেনে থাকবেন সিপিডি সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছে। এর মধ্যে আমি নিজে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। তারা কেউ কেউ সুবিধা পাওয়ার কথা জানালেও বেশিরভাগই বড় বড় সমস্যার কথা আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। উন্নয়ন হয়েছে সেটা আমরা জানি। তাতে সমস্যাগুলো কিন্তু চলে যাচ্ছে না।
পরিকল্পনামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি কিন্তু সমস্যাগুলোকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। এখানে দেশের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খুব ভাল হতো আপনি যদি বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতেন। কারণ সমস্যাগুলোর সমাধান হওয়া দরকার। যদিও এখানকার অনেক বিষয়েই আপনার উত্তর দেয়ার কথা না।
পদ্ম ফুল ফোটার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কারণ পদ্ম ফুল বছরের একটি বিশেষ সময় ফোটে। আমাদের উত্তরগুলো পেতে পদ্মফুল ফোটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।