শফিক রহমান : অবশেষে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের শত কোটি সরকারি রাজস্ব লুটেরা ডন সাইফুলের মুখোশ উম্মোচিত হয়েছে। দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর সিরিজ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেকাস্টমস কর্তৃপক্ষ তদন্তে মেনে এর সত্যতা পায়। অনুসন্ধানে নেমেছে গোয়েন্দারাও। গত ৭ মে’২৩ কাস্টমসের কেমিক্যাল পরীক্ষায় লাইম স্টোনের আড়ালে “Black Granite Stone in Broken/Crashedform.” আমদানির প্রমাণ মিলেছে। কেমিক্যাল পরীক্ষায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে ইংরেজিতে, ”ইট ইজ নট লাইম স্টোন”।
সরেজমিনে জানা গেছে, চলতি মে মাসের এই কনসাইমেন্টে সুপিরিয়র রেডিমিক্স ৬১ হাজার ৪০০ টন পাথর আমদানি করেছিল। এ কনসাইমেন্টের আড়ালে সুপিরিয়র রেডিমিক্সের সাইফুল সরকারের রাজস্ব লুটপাট করেছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এর আগে গত এপ্রিলেও সে চারটি কনসাইমেন্ট আমাদানি করে। তথ্য মিলেছে, তারও আগে সে পর্যায়ক্রমে ৫২টি কনসাইমেন্ট একইভাবে আমদানি করে লাইম স্টোনের নামে গ্যাব্রো স্টোন আমদানি করে সরকারের শত শত কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল।
এ নিয়ে গত ১ মে’২৩ থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর টিম। ৩ মে অনুসন্ধানে মিলে চট্টগ্রাম কাস্টমসে সরকারি রাজস্ব লুটেরা কাস্টমস ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ডন সাইফুল রাতারাতি আস্ত জাহাজ বোঝাই লাইম স্টোন খালাস করে দিয়েছে নিজস্ব ২৫টি লাইটারেজ ও ক্রেন দিয়ে।
দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন এর হাতে এসেছে সেই কেমিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ল্যাবরেটরির কেমিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টটির নম্বর-সি-৬৭৬১২২।ফাইল নম্বর-৫/কা:/হা/চট্ট/এআরআই/৬৬৬/
কাস্টমস সূত্রের মতে, রেডিমিক্স কারখানার নামে পাথর আমদানি করলে ট্যাক্স কম পড়ে। কারণ, সরকার রেডিমিক্স কারখানাকে একটা সাবসিডি দেয়। এমনিতে সাধারনত যে পাথর আসে সেটার ট্যাক্স পার টন ১৩০০ টাকা। আর লাইম স্টোন (পাথর) যেটা আসে সেটার ট্যাক্স ৭০০ টাকা। এতে দেখা যায় পার টন ট্যাক্স ৬০০ টাকা কম-বেশি। ভুক্তভোগী একটি মহল এ সম্পর্কে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ, ভ্যাট কমিশনারেটসহ গোয়েন্দা কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও তারা কােন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা গেছে।
এ সম্পর্কে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডিসি মি. কবির গতকাল রবিবার দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানান, কাস্টমসের এআরআই সেকশন সুপিরিয়র রেডিমিক্স এর রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুলকে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী পরিস্থিতি আইনগতভাবে মোকাবেলা করা হবে।