জাতীয়

গ্রেনেড হামলাকারী খালেদা তারেক-রায় দ্রুত কার্যকর করেন-প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তারেক জড়িত এতে কোনো সন্দেহ নাই। ওই দিন প্রকাশ্যে আমাদের নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার বিচার হয়েছে, বিচারের রায় হয়েছে। এই বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করা উচিত।সোমবার গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা ও স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। গ্রেনেড হামলার স্থানে পৌঁছেই শহীদবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। পরে দলের পক্ষে নেতাদের সাথে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্জেস গ্রেনেড যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। আর সেটা ব্যবহার হলো আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ওপর। সেদিন যে বেঁচে গিয়েছিলাম, সেটা বিষ্ময়ের।রাজনৈতিক দলের ওপর গ্রেনেড হামলার মতো ঘটনা কল্পনাও করা যায়না মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেদিন হতাহতদের কেউ উদ্ধার করতে আসেনি। যারা উদ্ধার করতে এসেছিলো তাদের ওপর টিয়ারগ্যাস আর লাঠিচার্জ করা হয়েছিল। এখানেই প্রশ্ন, কেন উদ্ধারকারীদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছিল।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় সেদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ নাগরিকদের সেবক। কিন্তু তখন পুলিশের ভূমিকা ছিলো সন্দেহজনক। শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, কোনো আলামতও সংরক্ষণ করা হয়নি। আলামত রাখার কথা বলায় এক পুলিশ কর্মকতাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিলো। এমনকি আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। এতে কী প্রমাণ হয়? খালেদা-তারেক এটার সঙ্গে জড়িত। তদন্তেও প্রমাণ হয়েছে। ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান জড়িত। খুনিদের জবানবন্দিতে ফুটে উঠেছে। আর ২১ আগস্টে খালেদা-তারেক জড়িত, এটাও প্রমাণ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে এতো অর্থ কামায়! এফবিআই অফিসার হায়ার করে জয়কে অপহরণ করার জন্য। আমরা তো বুঝিনি। পরে মার্কিন সরকার ওই এফবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করে, তদন্তে বেরিয়ে আসে শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের নাম। তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি বিএনপি ও খালেদা জিয়া করে, এটা তো মানুষের কাছে স্পষ্ট। যে দলের উত্থানই হয়েছে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির জন্য। তাদের হাতে রক্ত। আমি একটা বই লিখেছি, সবকিছু লিখেছি। এগুলো মানুষের জানা দরকার। ১৫ আগস্টে কী হয়েছে? আমার বাবা-মা, ভাইবোন সবাইকে হত্যা করেছে। বারবার আঘাত করেছে আমাকে হত্যার জন্যও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির হাতে মানুষের রক্ত। হাজার হাজার নেতাকর্মী তারা হত্যা করেছে। পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। তারা সরকারে আসার পর শুরু হলো অগ্নিসন্ত্রাস। বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, তারা জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঘোষণা করেছিলো, আসলেই তারা ঘাতক।
তিনি বলেন, বিএনপির ভাড়াটে হয়ে আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলছে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ৭৫ ও ২১ আগস্টের সময় মানবাধিকার কোথায় ছিলো?  তিনি বলেন, দেশে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। আর আওয়ামী লীগ দেশে মানবাধিকার সংরক্ষণ করেছে।শেখ হাসিনা বলেন, তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চলে গেছে। সাহস থাকলে দেশে আসেনা কেন। দেশের মানুষ তাকে ছাড়বে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ যেন আর তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশ্বের বুকে মর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে। খুনি-সন্ত্রাসী ও মানিলন্ডারিংকারীরা যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
সভায় আরও স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দোয়া ও মুনাজাত করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান। সভায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা জানান ১৪ দলের নেতারা। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button