লিড নিউজ

গর্বের পদ্মা’য় ভাগ্যবতী

 

শফিক রহমান : অবশেষে গর্বের পদ্মায় ভাগ্যবতী পদচারণা করলেন। হাঁটলেন দেখলেন আর উচ্চসিত হলেন। জানা গেছে, ভাগ্যবতীর গাড়ি পদ্মা সেতু দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত ঘুরে আবারও মাওয়ায় ফিরে আসে। এসময় খুব উচ্চসিত ছিলেন ভাগ্যবতী। উচ্ছাস তো হওয়ারই কথা। কারণ এ সেতু নিয়ে বিশ্বময় কম নাটকিয়তা হয়নি। ছিল চ্যালেঞ্জ নেয়ার এবং পাল্টা চ্যালেঞ্জ দেয়ার ক্ষমতা। যা দিয়েছিলেন ভাগ্যবতী এবং দেখিয়েও দিয়েছেন ভাগ্যবতী। যে চ্যালেঞ্জে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে দেখিয়েছেন বাংলাদেশও পারে।

সেই পদ্মা’র বুকে দাড়িয়ে ভাগ্যবতী তো উচ্ছাস করবেনই। তাই ফিরতি পথে গাড়ি থেকে নেমে সেতুর ওপর দাঁড়ান আমাদের ভাগ্যবতী নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখনও তাঁর উচ্ছাস। উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ হাঁটাহাটিও করেন পদ্মা সেতুতে। এই পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি-চেষ্টার অভিযোগ এনেছিলেন বিশ্বব্যাংক। তখন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন ভাগ্যবতী। চ্যালেঞ্জে হেরে গেছে বিশ্বব্যাংক। জিতেছেন ভাগ্যবতী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার ভোরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতু ঘুরে দেখেন। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে শুক্রবার ভোরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা। এই পদ্মা নিয়ে রাজনৈতিক বাদানুবাদ, গুজব, কত কিছু। এসব ছাপিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। পৌষের ভোরে নির্মাণের শেষ প্রান্তে থাকা সেই স্বপ্নের সেতু ঘুরে দেখলেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত দিয়ে শুক্রবার ভোরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা।সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।এর আগে হেলিকপ্টার থেকে সেতুটি দেখার অভিজ্ঞতা থাকলেও এবারই প্রথম হেঁটে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর। আর পরের বছর ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ভিত স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় সেতু।২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর ধূসর রঙের সপ্তম স্প্যান বসানোর পর সেতুর এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়। শুরুতে তিন-চার মাস পরপর স্প্যান বসানো হতো, তবে ২০১৮ সাল থেকে বদলে যায় পরিস্থিতি। প্রতি মাসে একাধিক স্প্যান বসাতে সক্ষম হয় সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।
২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ৪১ নম্বর স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ। পদ্মার বুকে দৃশ্যমান হয় ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু।মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদীশাসনের কাজ করেছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।শুরুতে এই মহাপ্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি, তবে তিন ধাপে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্প ব্যয়। শেষ পর্যন্ত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
আগামী জুনে যান চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেয়ার কথা আগেই জানিয়ে রেখেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button