স্বাস্থ্য

রমজানে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় করণীয়


স্বাস্থ্য ডেস্ক : যদিও সংযমের মাস তারপরেও ইফতারে অতিভোজন, অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত ভাজাভুজি খাবার কমবেশি সবাই খেয়ে থাকেন। এসব তৈলাক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কয়েক দিন খেলেই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি হয় সব বয়সীদেরই।
পেট ফাঁপা, বুক ও গলা জ¦ালাপোড়া করা, টক ঢেকুর, বদহজম যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায়। পাশাপাশি ক্লান্তি এবং অবসাদও বাড়ে। এসব ক্ষেত্রে প্রথম দিকে ওষুধে মুক্তি মিললেও একপর্যায়ে ওষুধও তেমন একটা কাজ করে না। তাই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভরসা রাখতে পারেন কিছু ঘরোয়া দাওয়াইয়ে।
জিরা: জিরা রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। এটি এমনই একটি মসলা, যা সহজেই রান্নাঘরে পাওয়া যায়। আমিষ হোক বা নিরামিষ সব রান্নাতেই জিরার প্রয়োজন রয়েছে। জিরা হজম রসকে উদ্দীপিত করে, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, বদহজমের মতো সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর ভ‚মিকা রাখে।
তুলসি: তুলসি পাতা ও এলাচ দিয়ে ফোটানো পানি পান করলে খুব সহজেই পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পেটের সমস্যা দূর করতে বহু শতাব্দী ধরে তুলসির ব্যবহার হয়ে আসছে। তুলসি পাতার নির্যাস গ্যাস্ট্রিকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। যদি খাওয়ার পর পেট ফাঁপা, বুক ও গলা জ¦ালাপোড়া করা, টক ঢেকুরের মতো সমস্যায় ভোগেন তাহলে নিয়মিত তুলসি পাতা খেতে পারেন, এতে আপনার গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
আদা: আদা কুঁচি করে সামান্য লবণসহ চিবিয়ে খেলে অ্যাসিডিটি উপশম হয়। কারণ আদার অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে। সম্ভব হলে আদা কুঁচি পানিতে সেদ্ধ করে খুব অল্প করে খেতে পারেন। মনে রাখবেন বেশি আদা সেদ্ধ পানি খাবেন না, এতে হিতে বিপরীত হবে।
পার্সলে: যারা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য পার্সলে কিন্তু দারুণ ভেষজ। এর পাতা আমরা রান্নায় ব্যবহার করে থাকি। আয়ুর্বেদ মতে পার্সলে মূত্রবর্ধক। এটি শরীর থেকে পানি ও লবণের ক্ষয় বাড়াতে সাহায্য করে।
মৌরি: খাবারের পর অনেকেই না বুঝ মুখে মৌরি দিয়ে থাকেন। এটি কিন্তু হজম শক্তি বাড়ায় ও হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। পেট ফাঁপা সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে। মৌরির বীজগুলো পাকস্থলী এবং অন্ত্রের পেশীগুলোতে ভালো প্রভাব ফেলে, যা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে সৃষ্ট কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাস দূর করতে সহায়ক।
পুদিনা: যাদের খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেট ফাঁপার সমস্যা রয়েছে তারা পুদিনা খেতে পারেন। এটি পেটে অতিরিক্ত গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। অ্যাসিডিটির সমস্যায় দুই থেকে তিনটি পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। কিংবা এক কাপ পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে সেদ্ধ করে পানিটা পান করবেন। বমিভাব, জ¦ালাপোড়া দূর করে সতেজ করে তুলবে।
ক্যামোমিল চা: যারা পেট ফাঁপা, বুক ও গলা জ¦ালাপোড়া করা, টক ঢেকুর, বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এই ভেষজ চা দারুণ উপকারী। চায়ের এই পাতাগুলো গ্যাস্ট্রাইটিসের মতো প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং আলসার থেকেও মুক্তি দেয় সহজে। হজমের সমস্যা কার্যকরভাবে কমাতে প্রতিদিন এক কাপ গরম ক্যামোমাইল চা খেতে পারেন। অনেক আরাম পাবেন।
এ ছাড়া অ্যাসিডিটির জ¦ালাপোড়া, পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে বাঁচতে সব সময় বেশি বেশি করে পানি পান করার চেষ্টা করুন। এক গøাস পানিতে এক চা চামচ মেথি গুঁড়া মেশানো পানি খেতে পারেন। আর নিয়মিত খাবার গ্রহণ, ভাজাপোড়া খাবার পরিহার, দুশ্চিন্তা পরিহার, পর্যাপ্ত ঘুম, ধূমপান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এবং ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button