![](https://dainiksottokothaprotidin.com/wp-content/uploads/2022/04/Us-3333-2-780x470.png)
বিশেষ প্রতিনিধি : কাস্টমস ও গোয়েন্দা তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোহা. আব্দুর রউফ দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিনকে জানান. আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের দুবাই থেকে আসা ইউএস-৩৪২ নম্বর ফ্লাইটে স্বর্ণবার আসবে। সোর্সের তথ্য নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ক্যাটারিং সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যান থেকে ৫ কোটি টাকার স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার দায়ে ইউএস বাংলার এয়ার হোস্টেজ মৌসুমি কে গ্রেফতার করা হয়।
আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে মৌসুমি ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সোনা চোরাচালানের বিস্তারিত তথ্য জানায়।
এই চালানটি ছাড়াও কাস্টমস গোয়েন্দাদের অভিযানে ইউএস বাংলার শত কোটি টাকার সোনা চোরাচালানের খবর বেরিয়ে আসে। গোল্ড স্মাগলিং ও ভূমি দস্যুতা আড়াল করতে ইউএস বাংলার মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন একাধিক মিডিয়া হাউজ কিনে এবং মেইন স্ট্রিমের সাংবাদিকদের কব্জা করা শুরু করে। এই পর্যায়ে অন্যান্য বারের মত ফের মালদ্বীপে সাংবাদিকদের প্রোমোদ ভ্রমন করিয়ে আনে। মামুনের সোনা চোরাচালানের পর তার সবচেয়ে বড় ব্যবসা এখন ভূমিদস্যুতা। ঢাকার পাশে রুপগঞ্জ এখন মামুনের অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে বেশ জমজমাট। কিনছে ৫০ বিঘা দখল করছে পাঁচশত বিঘা। মামুনের অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে বান্টি গ্রামের মানুষ একাধিকবার বিক্ষোভ করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
এদিকে ইউএস বাংলার মিডিয়া বকশিশ নিয়ে তোলপাড় চলছে সোসাল মিডিয়ায়। ঢাকার প্রায় শতাধিক মেইন স্ট্রিমের সাংবাদিককে মালদ্বীপে আনন্দ ভ্রমনে নিয়ে এই আলোচনা সমালোচনা এখন তুঙ্গে। রুপগন্জের কৃষি জমি বিনষ্ট করে হাউজিং কোম্পানি গড়ে তুলেছে ইউএস বাংলা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ইউএস বাংলা এখানে মগের মুল্লুকের রাজত্ব চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন কলম চলে না। কেউ নিউজ করে না। বিক্ষুদ্ধ রুপগন্জ এর শত শত ভুক্তভোগী মানুষ ইউ এস বাংলার জমি দখলদারির হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
গোয়েন্দা সূত্রের মতে, ইউএস বাংলা তাদের সোনা চোরাচালান স্বাভাবিক রাখতে প্রায়সই সাংবাদিকদের স্পন্সর করে ভ্রমণে নিয়ে যায়। কারণ এই সাংবাদিকরাই তাদের সব ধরনের দুর্নীতি ও অপরাধের ঝুট ঝামেলায় এগিয়ে আসে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। গুগলে ইউএস বাংলার কর্মীদের সোনা চোরাচালান লিখে সার্চ দিয়েও সেটার সত্যতা পাওয়া যায়। নিজেদের অপরাধ ঢাকতেই দেশের মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার সাংবাদিকদের গভীর সখ্যতা এবং একাধিক মিডিয়া হাউজ এর মালিক হয়েছেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স।
আর সাংবাদিকদের একত্র করার কাজটি মূলত করেন ইউএস বাংলার ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার। মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে যে শুধু সাংবাদিকদের একত্র করা হচ্ছে তাই নয়, এসব সিনিয়র এবং এভিয়েশন খাতের সাংবাদিকদের তুষ্ঠ’ও করেন তিনি। সাংবাদিকদের মালদ্বীপ ট্যুরে নিয়ে যাওয়ার কাজটি করেছেন মহিউদ্দিন। এদিকে গত ২৯ মার্চ রুপগঞ্জে স্যাটেলাইট চ্যানেলে এস এ টিভি ইউএস বাংলার প্রজেক্টে ভূমিদস্যুতা নিয়ে বিশেষ রিপোর্ট করতে গেলে ইউএস বাংলার প্রজেক্ট কর্মকর্তারা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
এদিকে গোল্ড স্মাগলিং এর পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে ইউএস-বাংলা গ্রুপের ১২ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আত্মসাৎ করে মাত্র কয়েক বছরে ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ’ হয়েছে ইউএস-বাংলা গ্রুপ। এ গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠানের একটির বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালান ও আরেকটির বিরুদ্ধে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধার অপব্যবহার এবং অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে।
ভ্যাট প্রশাসন সূত্র জানান, ইউএস-বাংলা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা অ্যাসেটস লিমিটেড ঢাকার অতিসন্নিকটে পূর্বাচলে যে ‘পূর্বাচল আমেরিকান সিটি’ প্রকল্প রয়েছে, তাতে ভ্যাট ফাঁকি চলছে ফ্রিস্টাইলে। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএস-বাংলা অ্যাসেটস লিমিটেডের অন্য দুই আবাসন প্রকল্প হলো- ইস্ট আমেরিকান সিটি ও হলিডে হোমস কুয়াকাটা। এ তিন আবাসন প্রকল্পের ভ্যাট ফাঁকি খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ইউএস বাংলার এমডি আব্দুল্লাহ আল মামুন এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে এ সম্পর্কে গ্রুপের মিডিয়া দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (জিএম পিআর) কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সোনা চোরাচালানে ম্যানেজমেন্টের কেউ জড়িত ছিল না। সোনা চোরাচালান মামলাগুলো চলমান রয়েছে।
কোম্পানি কোনো নেগেটেভ কাজে জড়িত নয়। যারা জড়িত ছিল তাদের দায় ইউএস বাংলা নেবে না। সাংবাদিকদের মালদ্বীপে প্লেজারট্রিপ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা মহিউদ্দিন সাহেব ম্যানেজ করেছে। আসলে আমরা এটা করেছি সমুদ্র বেইজড ট্যুরিজম কে ডেভেলপ করতে। সাংবাদিকরা এটা তাদের লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরবে। তবে মালদ্বীপ ভ্রমণ শেষে কোনো সাংবাদিক এ সম্পর্কে এখনো প্রতিবেদন করেনি-আশা করছি করবে।
মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে হত্যা করা হয় অন্তরকে। গত ১৬ এপ্রিল শনিবার রাত সাড়ে ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত এবং ১৯ এপ্রিল রাত দুইটার দিকে সন্দেহভাজন এরশাদ আলী আকাশ (৩৪) এবং রিপন সরকার (৩২) নামে দুই সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে পাবনা জেলার চাটমোহর থানার গুয়াখাড়া স্টেশন এলাকা থেকে আটক করে র্যাব।
আজ ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান র্যাব-৫ রাজশাহী এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহরিয়ার। নিহত অন্তর পাবনা জেলার চাটমোহর থানার পাতাইলহাট এলাকার ছবের আলীর ছেলে।
তিনি আরো জানান, এরশাদ আলী আকাশ এবং রিপন সরকার মাদক কারবারি এবং তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করতো এই ভিকটিম অন্তর। এদের মধ্যে মাদক কারবারির টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এতে তারা অন্তরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পিতভাবে অন্তরকে ডেকে নিয়ে গুরুদাসপুরে আসে। সেখানে মাদ্রাসার বারান্দায় ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে অন্তরকে চোলাই মদ খাওয়ায়। এরপরে অন্তর অচেতন হয়ে পড়লে তার গায়ের শার্ট খুলে দুজনে মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপরে সেখান থেকে আবারও তারা অন্তরের মরদেহ বারান্দায় ফেলে রেখে চাটমোহরে ফিরে যায়। গুরুদাসপুরের উদবারিয়ার মাদ্রাসার বারান্দায় অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ প্রাপ্তির সংবাদে র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে। এরই সূত্র ধরে সন্দেভাজন দুজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তরকরা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম নাহিদ হাসান (১৮)। তিনি পথচারী ছিলেন। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে তিনি মারা গেছেন বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোজাম্মেল হোসেন খান নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আইসিইউতে চারজন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদের মধ্যে নাহিদ হাসান ও মোরসালিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাহিদ মারা গেছেন।
জানা গেছে, নাহিদ বাটা সিগনাল এলাকায় কুরিয়ার সার্ভিসের একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করতেন। তার স্ত্রী ডালিয়া আক্তার সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার সকালে কামরাঙ্গীরচর দেওয়ান বাড়ি এলাকার বাসা থেকে কর্মস্থলে যান। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বামী নাহিদের হাসপাতালে ভর্তির সংবাদ পান। নাহিদের বাবার নাম নাদিম হাসান। শুভ নামে একজন দুপুরের দিকে আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় আহত অবস্থায় নাহিদ রাস্তায় পড়ে ছিলেন বলে জানা গেছে।