পাঠ্যাভ্যাস গড়ে আগামীর সুন্দর পৃথিবী গড়ি
বই পড়লে মানুষের সুকুমারবৃত্তি বিকশিত হয়। ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়। সময়ের ব্যবধানে বইয়ের স্বরূপ বদলেছে। হাতে লিখা থেকে শুরু হয়ে মুদ্রিত মলাট বন্দি বই আজ বিশে^র ডিজিটাল মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছে। হতের মুঠোয় আজ গোটা বিশ্ব বই বিলুপ্ত হবার কোনও সম্ভাবনা নেই। বই আছে থাকবে। বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় নি। তাই বই কেনা একটি ভালো অভ্যাস। বেশ কিছু পরিবারে পারিবারিক গ্রন্থগারও রয়েছে, রয়েছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক বই সংগ্রহ।
গত ২৩ এপ্রিল ছিল বিশ্ব গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র যৌথ ভাবে আয়োজন করে এক অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দীক। মেধাস্বত্ব নিয়ে আলোচনা করেন সাবেক কপিরাইট রেজিস্টার জাফর রাজা চৌধুরী। কথা সাহিত্যিক আনিসুল হকও এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ যথাযথই বলেন, বই হোলো বিশে^র দ্বিতীয় সংস্করণ। পৃথিবীকে মানুষ যত গভীর ভাবে জেনেছে, সুন্দরভাবে উপলব্ধি করেছে, তা কবিতা, গানে, সাহিত্যে প্রকাশ করেছে। এ কারণে অনেক সময় বাস্তবের পৃথিবীর চেয়ে বইয়ের পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠেছে। আমরা যদি পৃথিবীকে বদলাতে চাই, দেশ ও সমাজের পরিবর্তন চাই, আর নিজেকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে চাই, ভালো মানুষ হতে চাই, তাহলে বইয়ের বিকল্প নেই। আমাদের বই পড়তেই হবে।
ডিজিটাল প্রিন্টিং সিস্টেমের উন্নয়নের ফলে সৃষ্টিশীল অনেক মেধা চুরির অভিযোগ উঠেছে। অথচ মেধাস্বত্ব আইন বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের আইনের সুরক্ষা দেয়। কিন্তু কোনও বাধ্যবাধকতা না থাকায় অনেকেই মেধা সম্পদের নিবন্ধন করেন না। ফলে অনেক সময় নিজেই নিজের মেধা সম্পদের অধিকার নিয়ে সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। স¤প্রতি প্রয়াত লেখক আহমদ ছফার বই এবং জনপ্রিয় মাসুদ রানার সিরিজ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। কাজেই সৃষ্টিশীল কাজের সাথে যুক্ত মেধা সম্পদ সংরক্ষণের জন্য নিবন্ধন করা জরুরি হয়ে উঠেছে। আর মননশীল জাঁতি গঠনে বই পড়ার বিকল্প নাই। চারিদিকের সন্ত্রাস রুখতে মননশীল বই পড়ে সবইকে মানবিক হয়ে উঠতে হবে। দানবিক সব আচরণ ভুলে। কাজেই বই পড়–ন, অন্যকে বই পড়তে বলুন। পাঠ্যাভ্যাস গড়ে আগামী সুন্দর পৃথিবী গড়ি।