বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, এইট পাস দিয়ে, মেট্রিক ফেল দিয়ে দেশ চললে উন্নয়ন হয় না। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার আগে সরকারে ছিল বিএনপি। ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল বিএনপির সময়। আমরা ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত নিয়েছিলাম। কোভিড টিকা কিনেছি, বিনিয়োগ করেছি, বিমান কিনেছি, পায়রা বন্দর নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। এভাবে রিজার্ভ থেকে খরচ হয়েছে। ঘরের টাকা ঘরে থাকছে। দেশের জনগণের উন্নয়নে এই টাকা ব্যবহার করছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না।
আজ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে। সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলও বক্তব্য রাখেন।শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অনেক সমালোচনা করছে অনেকে। তারা নাকি উন্নয়ন চোখে দেখে না। এই যে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এগুলো কে করেছে?
তিনি বলেন, বিএনপির অনেক নেতা মানি লন্ডারিং, লুটপাট, দুর্নীতির কথা বলে। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। মানি লন্ডারিং মামলায় সে সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত। অস্ত্র মামলার আসামি। তাদের মুখে এই সমালোচনা মানায় না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গড়ার কাজে হাত দেন, তখন এক টাকাও রিজার্ভ ছিল না। কিন্তু তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে আবার উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাই। বাংলাদেশকে এখন কেউ অবহেলার চোখে দেখে না।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমাদের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে যুবদের একটা অবস্থান আছে। তাই বঙ্গবন্ধু যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই জাতির পিতা ১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন এবং ৭ মার্চের ভাষণ দেন। আজ এখানে বলতে চাই, আমি এই দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে চাই। তরুণরাই এতে নেতৃত্ব দেবে।
যুব সমাজের উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি। ব্যাংক, বিমা, বিদ্যুৎ, টেলিভিশন, পুরো বাংলাদেশে সড়ক নেটওয়ার্ক, সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের কথা তিনি উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। এছাড়া কৃষি জমির ব্যবহার করতে হবে। এসব সুযোগ কাজে লাগাতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
করোনার সময়, গৃহহীনদের ঘর করে দেওয়া সংক্রান্ত সরকারের প্রকল্পে, কৃষকের ধান কেটে দিয়ে, বিভিন্ন সময়ে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি যুবলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ধন্যবাদ জানান। তাদের উদ্দেশে বলেন, দেশের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংকশনের কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। প্রতিটি নেতাকর্মীকে বলবো, নিজের গ্রামে যান, নিজের জমি চাষ করবেন। অন্যের জমিতে যাতে উৎপাদন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। যেকোনও চাষ, সবজি, গাছপালা লাগাতে হবে। সন্ত্রাস রুখতে হবে। সবসময় মানুষের পাশে থাকতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।