ইসলাম

ঈদের রাতের ইবাদত কিয়ামতের ভয়াবহতায় মুক্তি মিলবে

 

ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদের রাত জাগলে কিয়ামতের ভয়াবহতায় মুক্তি মিলবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ’যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত জেগে ইবাদত করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। রাতগুলো হলো, ৮ জিলহজের রাত, আরাফার রাত. ঈদুল আজহার রাত, ঈদুল ফিতরের রাত এবং ১৫ শাবানের রাত। ’ (তারগিব ও তারহিব)

ঈদের রাত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাতে জাগ্রত থেকে মহান আল্লাহ পাকের দরবারে ইবাদতে মশগুল থাকবে, যেদিন অন্য সমস্ত দিল মরবে, সেদিন তার দিল মরবে না। ’ এর অর্থ হলো- কিয়ামতের দিন অন্যান্য দিল পেরেশানীতে থাকলেও দুই ঈদের রাত জাগরণকারী ব্যক্তির দিল শান্তিতে থাকবে।
(তিবরানী শরীফ) হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘পাঁচটি রাতের দোয়া কখনও ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। রাতগুলো হলো- জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতরের রাত ও ঈদুল আজহার রাত। ’

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘রমজানের শেষ রাত্রে রোজাদার বান্দা ও বান্দিকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। ’ একজন জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রসুল, ওই রাত্র কি শবে কদর?’ রসুল (স.) বললেন, ‘না, বরং আমলকারী যখন আমল করে, আমল পূর্ণ হওয়া মাত্র তার প্রতিদান দিয়ে দেওয়া হয়। ’ (মুসনাদে আহমদ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৯২)

এই হাদিসের অর্থ এই যে, উম্মতে মুহাম্মদির যেই সদস্য রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য সামনে রেখে রোজা রাখবে, রমজানের শেষ রাত্রে তার আমলের প্রতিদান তার রেকর্ডে লিখে রাখা হয়। রমজানের শেষ রাত্রকে বায়হাকি শরিফের এক হাদিসে ‘লাইলাতুল জায়িযাহ’ বা পুরস্কারের রাত বলা হয়েছে। এই রাত্রে প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে পুরস্কার দিবেন।

একদা ঈদুল ফিতরের দিন হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হযরত উমর (রা.)-্এর নিকট গেলেন। গিয়ে দেখলেন, ঘরের দরজা বন্ধ করে তিনি কাঁদছেন। হযরত আবু হুরায়রা আরজ করলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি কাঁদছেন অথচ লোকেরা ঈদের আনন্দে মুখর! হযরত উমর (রা.) বললেন, ’আনন্দে মুখর ব্যক্তিরা যদি জানতো, তাহলে তারা আনন্দ-উৎসব করতো না। ’ অতঃপর পুনরায় তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ’তাদের আমল যদি কবুল হয়ে থাকে তবে তারা আনন্দ করুক। আর যদি কবুল না হয়ে থাকে তথা বর্জিত হয়ে থাকে তবে তারা কাঁদুক। কিন্তু আমি জানি না, আমার আমল কবুলের পর্যায়ভুক্ত না বর্জিতের অন্তর্ভুক্ত। ’

এ ছাড়াও আরও অসংখ্য হাদিস দ্বারা ঈদের আগের রাতের ফজিলত ও তাৎপর্য অকাট্যভাবে প্রমাণিত।এই রাতে দোয়া কবুল হয় ঈদের রাতের বড় প্রাপ্তি হলো, এই রাতে দোয়া কবুল হয়। কোনো দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। বরং আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে তা সরাসরি কবুল হয়। তাই এ রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বন্দেগী, তছবীহ্ পাঠ, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, দরূদ শরীফ ও যিকির-আযকারের মাধ্যমে অতিবাহিত করা অতি উত্তম। মনের নেক মকছুদসমূহ মহান আল্লাহ পাকের নিকট জানালে মহান আল্লাহ পাক নিশ্চয় তা কবুল করবেন।

তাই আসুন, সম্ভব হলে সবাই রাত জেগে এ রাতে আমল করি এই নিয়তে-যেন আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের ময়দানের ভয়াবহতা থেকে আমাদের মুক্তি দেন, জান্নাতবাসী করেন।

 

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button