৮ বিভাগের খবর

স্বপ্নচূড়ায় স্বপ্নভঙ্গ মোবারক পরিবারের

গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

লাবণ্য চৌধুরী : রাজধানীর মগবাজার মধুবাগের স্বপ্নচূড়া ভবনে স্বপ্নভঙ্গ হলো নিহত মোবারক হোসেনের পরিবারের। বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো একই পরিবারের পাঁচ সদস্য’র স্বজনরা কেবল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন স্বপ্নচূড়ায়।
কান্নার রোল ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ভবনেও।

ক’দিন বাদেই পরিবার নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিলো সৈয়দ মোবারক হোসেনের। দেশ ছাড়ার আগে স্ত্রী-ছেলে-মেয়েকে নিয়ে একসঙ্গে খেতে গিয়েছিলেন কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে। এদিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

কিন্তু সেখানেই বৃহস্পতিবারে অগ্নিকাণ্ডে তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার তাদের একসঙ্গে দাফনের জন্য পাঁচটি কবর খোঁড়া হয় তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে। সেখানে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ পরিবারে প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন অনেকেই।

নিহতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৫০), তার স্ত্রী স্বপ্না (৩৫), মেয়ে কাশফিয়া (১৭) ও নূর (১৩) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কাউসার দীর্ঘদিন ধরে ইটালিতে ব্যবসা করতেন। মাসখানেক আগে ইটালি থেকে দেশে আসেন তিনি। সেখানে স্থায়ীভাবে (গ্রিন কার্ড) থাকার সুযোগ পেয়েছেন সম্প্রতি। তাই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছিলো। ভিসাও হয়ে গিয়েছিলো সবার।

স্বজনরা বলছেন, সবাইকে নিয়ে রাতের খাবার খেতে ঢাকার বেইলি রোড়ের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন মোবারক। সাথে ছিলেন স্ত্রী স্বপ্না ও দু’মেয়ে এবং একমাত্র ছেলে আব্দুল্লাহ। আগুনে পুড়ে সবার মৃত্যু হয়েছে।শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই পরিবারের পাঁচজনের লাশ বুঝে নিতে এসে মোবারকের দুলাভাই সৈয়দ গাউসুল আজম জানান, তাদের ইতালি যাওয়ার ফ্লাইট ছিলো চলতি মাসের ১০ তারিখে।

রাজধানীর বেইলি রোডের ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে এ তথ্য জানান তিনি।বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডে ছয়তলা ভবনে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে এবং রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান এবং ঘটনাস্থলকে ‘ক্রাইম সিন’ ঘোষণা দিয়ে ভবনটির সামনে হলুদ ফিতা আটকে দেন। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।ভবনটিতে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ছাড়াও, স্যামসাংয়ের শোরুম, গ্যাজেট অ্যান্ড গিয়ার, ইলিন, খানাস ও পিৎজা ইনের আউটলেট ছিলো বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button